মক্কা নগরীর পবিত্র হারাম শরিফ থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে, পাহাড়ঘেরা একাশিয়া এলাকায় গড়ে উঠেছে কোরবানির পশুর বিশাল হাট। চারপাশে উঁচু পাহাড়, আর তার পাদদেশে বিস্তৃত ছাউনির নিচে চলছে খাসি বিক্রি ও কোরবানি কার্যক্রমের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। পবিত্র হজ ও ঈদুল আজহার আগে জমে উঠেছে এই এলাকা। সৌদি সরকারের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, অনুমোদিত স্থানের বাইরে কোরবানি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইন অমান্য করলে জরিমানাসহ নানা শাস্তির মুখে পড়তে হয়।
ফলে হাজিরা কিংবা স্থানীয় কোরবানি প্রদানকারীরা সাধারণত নিজেরা কোরবানি না দিয়ে নির্ধারিত স্থানে পশু কিনে রেখে দেন এবং পরে প্রক্রিয়াজাত মাংস হাতে পান নির্ধারিত সময় অনুযায়ী।
১ জুন বিকেলে একাশিয়ার এই পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে রয়েছে ইংরেজি ‘এল’ আকারের দুটি বিশাল ছাউনি। ছাউনির নিচে সারি সারি খাসি রাখা। সঙ্গে রয়েছে পানির ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপকরণ, আর কোরবানি ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী। বাংলাদেশি তরুণ ব্যবসায়ী মো. রুবেল জানালেন, এই হাটে মূলত যেসব হাজি নিজেরা কোরবানি দিতে চান বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে কাজটি সম্পন্ন করতে চান, তাঁদের জন্যই রয়েছে এই বিশেষ আয়োজন।
মো. রুবেল দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবে ব্যবসা করছেন। তার সঙ্গে একাশিয়া সফরে ছিলেন ঢাকার ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদের খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম। রুবেলের মাধ্যমে জানা যায়, হাজিরা এই হাটে এসে খাসি নিজেরা পছন্দ করে রেখে যান। নির্ধারিত তারিখে অর্থাৎ ১০ জিলহজে তা কোরবানি করা হয়। এরপর তা পরিষ্কার করে প্যাকেটজাত করা হয় এবং গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী।
একাশিয়ায় এখন প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতার ভিড়। কেউ নিজের জন্য, কেউ স্বজনদের জন্য খাসি কিনে রেখে যাচ্ছেন। হজের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে প্রস্তুতির গতি। নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে এবং আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এই কোরবানির হাটটি এখন মক্কার হজ মৌসুমে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
Leave a comment