২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে এ সংক্রান্ত তদন্তের জন্য কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে শাপলা স্মৃতি সংসদ। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক সাত দফা দাবি তুলে ধরেন।
‘শাপলা চত্বর: শাহাদাতের রক্তে রাঙা অবিনাশী চেতনা’ শীর্ষক এই সম্মেলনে মামুনুল হক বলেন, “২০১৩ সালের ওই রাতের রক্তাক্ত ঘটনার সত্য উদঘাটন ও ইতিহাস সংরক্ষণ আজ সময়ের দাবি। সরকারের উচিত শহীদদের স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্ব নেওয়া।” তিনি আরও জানান, নিহত ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন এবং শহীদ ও পঙ্গুদের জন্য মাসিক ভাতা চালুর মতো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সংগঠনের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে শাপলা চত্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনার সত্য ইতিহাস জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা, এই ঘটনাকে জাতীয় ট্র্যাজেডি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় নথিতে শহীদদের যাচাইকৃত তালিকা সংযুক্ত করা এবং অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে, হেফাজতে ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা ‘হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়।
মামুনুল হক সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, ‘শাপলা কেন্দ্রিক বিভিন্ন কাজে অংশীজনের সম্মাননা ও সম্মিলনী ২০২৫’ আগামী ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ওই অনুষ্ঠানে শাপলা চত্বর নিয়ে যারা বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন, তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন এবং মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
এছাড়াও শাপলা চত্বরে আহত মাওলানা আবদুর রহিম ও মাওলানা রাশেদুল ইসলাম এবং নিহত হাফেজ আল আমিনের ভাই শফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ‘শহীদনামা’ শীর্ষক একটি স্মারক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়, যাতে শাপলা চত্বরে নিহতদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শাপলা স্মৃতি সংসদের এসব দাবির মধ্য দিয়ে একটি পুরনো ঘটনার পুনর্মূল্যায়ন ও রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা আগামী দিনে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসতে পারে।
Leave a comment