ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর অব্যাহত দাবির মুখেও জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি । এমন অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র দেখছে বিএনপি।
দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটি’ মনে করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অংশ ক্ষমতায় থাকতে নানা অজুহাতে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন কিছু ইস্যু নিয়ে নানা পক্ষের মাঠে আন্দোলনে নামার ঘটনাকে সন্দেহের চোখে দেখছে তারা। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ আদায়ের দাবিতে রাজপথে নামার কথা ভাবছে দলটি। কী ধরনের কর্মসূচি করা যায়-তা নিয়েও চলছে আলোচনা। তবে সেই আন্দোলন যাতে কোনো অবস্থায় সংঘাতের দিকে না যায়, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১৯ মে) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী দুই মাস দলের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি চলবে, আর তার মাধ্যমেই দলকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করা হবে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর যে তারুণ্যের সমাবেশ রয়েছে, সেসব কর্মসূচির মাধ্যমে দলের তরুণ কর্মীদের মাঠে নামানো হবে।
ইতোমধ্যে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল চট্টগ্রামে ও খুলনায় যৌথভাবে বিশাল সমাবেশ শেষ করেছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বগুড়া ও ঢাকায়ও সমাবেশ হবে। সর্বশেষ ঢাকার সমাবেশে বড় ধরনের লোকসমাগম করবে। রাজধানীর ওই সমাবেশ থেকে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের দাবিতে বিএনপির অবস্থান আরও স্পষ্ট করা হবে।
বিএনপি মনে করে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।
বিএনপি নেতারা বলেন, বিভিন্ন পক্ষ নানান দাবি নিয়ে হঠাৎ করে মাঠে নামায় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অবনতিশীল। সংকট উত্তরণে জাতীয় নির্বাচনই একমাত্র পথ।
তাই নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের পক্ষে মত দেন তারা। তবে এই ইস্যুতে এখনই মাঠে নামার মতো পরিস্থিতি হয়নি বলেও অভিমত দেন বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের কেউ কেউ।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় এই বৈঠকটি শুরু হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, এই সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে চায় না বিএনপি। সে কারণে এখন পর্যন্ত সরকারকে বিব্রত করার মতো কোনো কর্মসূচি দেয়নি। তবে আগামীতে সরকারের উপরে চাপ তৈরির জন্য বিএনপি ও তার মিত্ররা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচনের দিনক্ষণের দাবিতে কর্মসূচি দিতে পারে। তবে বিএনপি নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানাতে চায়।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠকটি শুরু হয়ে সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস (অনলাইন), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (অনলাইন), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান (অনলাইন), ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (অনলাইন), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (অনলাইন) এবং অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন
Leave a comment