সশস্ত্র বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুতদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম’-এর (বিসিপি) ব্যানারে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ করেছেন একদল সাবেক সামরিক সদস্য। মূলত চাকরিতে পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, বিভিন্ন সময়ে তারা অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাই পুনর্বহালই একমাত্র পথ। বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাব এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর গেট অভিমুখে পদযাত্রা করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দেয়, ফলে সেখানেই অবস্থান নেন তাঁরা।
পরে বিকেল ২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে প্রেসক্লাবে আসেন সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান। তিনি বিসিপি নেতাদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা করেন এবং তাঁদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত শোনেন।
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, প্রত্যেকে আলাদাভাবে আবেদন করুন। আমরা আবেদনগুলো গ্রহণ করে যাচাই-বাছাই করব। এরই মধ্যে একশোর বেশি আবেদন আমরা দেখে ফেলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মানবিকতা বজায় রেখেই সবকিছু বিবেচনা করব, তবে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ন থাকবে।’
তবে আন্দোলনকারীরা আলোচনায় সন্তুষ্ট হলেও কর্মসূচি প্রত্যাহারে রাজি হননি। বরং বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাড়ি নিয়ে প্রেসক্লাব ত্যাগ করতে গেলে বিক্ষোভকারীরা তাঁর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং গেট আটকে দেন। এতে সাময়িক অচলাবস্থা তৈরি হয়।
পরে আবারও আলোচনার চেষ্টা হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল ফের ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের সঙ্গে বৈঠকে বসে। আলোচনার ফল এখনও জানা না গেলেও আন্দোলনকারীরা বলছেন, চূড়ান্ত নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা সরে যাবেন না।
দিনব্যাপী এই কর্মসূচি ঘিরে প্রেসক্লাব এলাকা ছিল থমথমে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ। আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানের আশ্বাস দিলেও তাঁদের মুখে ক্ষোভ ও হতাশার ছাপ স্পষ্ট ছিল।
Leave a comment