
বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম কুখ্যাত অপরাধী ও সিরিয়াল কিলার এরশাদ শিকদারের জীবনের অবসান ঘটেছে আজ ভোররাতে, ফাঁসির মঞ্চে। খুলনা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১০ মে ২০০৪ সালের প্রথম প্রহরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে খুলনাঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল এই প্রাক্তন রাজনৈতিক নেতা। এরশাদ শিকদার ছিলেন একাধিক হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং পরে দণ্ডিত। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিজ হাতে বহু নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন এবং তাদের দেহ গুম করেছেন।
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে রাজনীতির ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধ জগতে নিজস্ব সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন তিনি। খুলনা শহরে ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তখনও তার বিচারের জন্য চেয়ে ছিল আইন ও প্রশাসনের দিকে।
২০০০ সালের দিকে তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছালে প্রশাসনের নজরে আসে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ। সে সময়ের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং একাধিক মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন।
খুলনার বহুল আলোচিত কিশোরী মুক্তা হত্যা মামলা ছাড়াও আরও অন্তত ২৪টি মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাকে জেলখানার মধ্যেও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হতো একাধিক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায়, কারণ বিভিন্ন অপরাধীচক্র এবং ভুক্তভোগী পরিবার তার প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেছিল।
কারা সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং ধর্মীয় আচার পালন করেন। রাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এর পর তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং পরে নিজ এলাকা বরিশালের একটি গ্রামে দাফন করা হয়।
এরশাদ শিকদারের মৃত্যুর মাধ্যমে বাংলাদেশের অপরাধ জগতের একটি জঘন্য অধ্যায় শেষ হলো। তবে তার বিরুদ্ধে পরিচালিত তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া এখনো দেশের আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের প্রতীকে পরিণত হয়ে আছে।
                                                                        
                                                                        
			            
			            
 
			        
 
			        
 
			        
 
			        
				            
				            
				            
Leave a comment