৬ মে গাজীপুরের শ্রীপুরে টাকার বিনিময়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে আসা দুই ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শ্রীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ট্রেড-২ বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে আটক করা হয় তাদের ।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—উপজেলার কেওয়া গ্রামের মামুন (২১) এবং লোহাগাছ গ্রামের জুনায়েত আহমদ সাগর (২২)। তারা জৈনাবাজার আদর্শ কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার্থী হাইয়ুল ইসলাম ও রানা মোল্লার জায়গায় প্রক্সি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। আটক ব্যক্তিদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪০৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে জৈনাবাজার আদর্শ কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার্থী রয়েছেন ৪১ জন। শুরু থেকেই নিয়মিতভাবে পরীক্ষা দিয়ে আসছিলেন দুই ভুয়া পরীক্ষার্থী এবং সাতটি পরীক্ষা শেষও করেছেন।
অষ্টম দিনের পরীক্ষায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সত্যতা স্বীকার করে। কেন্দ্র সচিব পরে তাদের পুলিশে হস্তান্তর করেন।
ভুয়া পরীক্ষার্থী মামুন জানান, পরীক্ষার্থী হাইয়ুল ইসলামের বদলে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে সে শুরু থেকে পরীক্ষা দিয়ে আসছিল এবং পরীক্ষার শেষে আরও টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
অপরদিকে জুনায়েত জানান, দশ হাজার টাকার চুক্তিতে রানা মোল্লার হয়ে সে প্রথম থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছিল। যার অর্ধেক অর্থ আগেই পরিশোধ করা হয়েছিল।
জৈনাবাজার আদর্শ কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেনডেন্ট রুখসানা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ভুয়া পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, বিষয়টি তার জানা ছিল না। পরে কেন্দ্রে এসে বিষয়টি জানতে পারেন। কীভাবে প্রবেশপত্র নিয়ে ভুয়া পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে—এই প্রশ্নে সঠিক কোনো উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা খাতুন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরীক্ষা চলাকালেই তাদের আটক করা হয়। তারা হুবহু নকল করা প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ব্যবহার করেছিল।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দুই ভুয়া পরীক্ষার্থী সনাক্ত করে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে কেন্দ্র সচিব শাহানা পারভীন জানান ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ১৯১৮ সালের পরীক্ষা আইনের ৪২ ধারার ৩ এর ক এবং খ উপধারায় প্রকৃত পরীক্ষার্থী ও প্রক্সি দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার বাদী হবেন কেন্দ্র সচিব ।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
Leave a comment