ইসরাইলি সেনারা স্থায়ীভাবে পুরো গাজা (৩৬৫ বর্গকিলোমিটার) দখলের পরিকল্পনা করছে । দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে। এতে গাজা দখল এবং তাদের ভূখণ্ড ধরে রাখার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এ ছাড়া চলমান আগ্রাসনে হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ইসরাইলি এক সরকারি কর্মকর্তার বরাতে নিশ্চিত করা হয়েছে।
সোমবার টাইমস অব ইসরাইলের লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা, গাজায় অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনাকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ইসরাইল , মধ্যপ্রাচ্যে ১৩-১৬ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের পরেই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কথা ভাবছে। এর আগে জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হামাসের সঙ্গে আলোচনার প্রচেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।
পরিকল্পনায় ২১ লাখ গাজাবাসীকে দক্ষিণের দিকে সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। তবে এমন পরিকল্পনা গাজার মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলবে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
সোমবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, সেনারা এখন পর্যন্ত গাজার যেসব অঞ্চল দখল করেছে সেখান থেকে তারা আর
সরবে না। এর বদলে সেনারা স্থায়ীভাবে সেখানে থাকবে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু গাজায় হামলা আরও তীব্র করার হুমকি দিয়েছেন ।
রোববার নৌ-ঘাঁটিতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জামির বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে বলেন, ‘আমরা আমাদের জনগণকে বাড়ি ফেরাতে এবং হামাসকে পরাজিত করতে চাপ বাড়াচ্ছি। আমরা নতুন এলাকায় অভিযান চালাব এবং সব সন্ত্রাসী অবকাঠামো মাটির ওপরে হোক বা নিচে তা ধ্বংস করব।’
অন্যদিকে ইসরাইলের ‘নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা’ গাজার জন্য ‘মানবিক সহায়তা বিতরণকে অনুমোদন দিয়েছে। গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ সহায়তা বন্ধ রয়েছে। ইসরাইলের এক রাজনৈতিক সূত্র সোমবার এএফপিকে জানিয়েছে, ‘গাজায় বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য রয়েছে’।
এদিকে হামাস গাজায় সরাসরি সাহায্য বিতরণের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, সহায়তা অবশ্যই আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় সরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। এটি কোনোভাবেই ‘রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইলের হাতিয়ার’ হওয়া উচিত নয়।
প্রসঙ্গত ,গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১১৯ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী-৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত ৫২,৫৬৭ জন নিহত ও ১১৮,৬১০ জন আহত হয়েছেন।
Leave a comment