ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে কানাডার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আজ সোমবার (২৮ এপ্রিল)।যুক্তরাষ্ট্রের পার্শ্ববর্তী দেশটি দীর্ঘদিন জাস্টিন ট্রুডোর নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু রিপাবলিকানরা ওয়াশিংটনের ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ট্রুডো।
সর্বশেষ জরিপগুলো দেখলে বোঝা যাচ্ছে, ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হওয়া মার্ক কার্নির নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে। তবে কনজাররভেটিভ পার্টিও ভাল লড়াই দিচ্ছে। অটোয়ার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ , ফেডারেল এ নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলছে, কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মে মাসেই বাণিজ্য ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন লিবারেল পার্টির নেতা অর্থনীতিবিদ মার্ক কার্নি। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তিনি।
সে আলাপেও মার্ক কার্নিকে ট্রুডোর মতো করেই ‘গভর্নর’ বলে ডাকেন ট্রাম্প। ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে কানাডার রাজনীতিতে।
জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, লিবারেলরা পেতে পারে ১৮২টি আসন, যেখানে এককভাবে সরকার গঠনে দরকার ১৭২টি আসন।
অন্যদিকে, নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করতে যাচ্ছে বলে জরিপে আভাস পাওয়া গেছে। দলটি মাত্র ৪টি আসন পেতে পারে। একই সঙ্গে ব্লক কিউবেকোয়া ২৩টি আসনে নেমে আসতে পারে।
প্রসঙ্গত , কানাডিয়ানদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন জাস্টিন ট্রুডো , কিন্তু এক দশকের ব্যবধানে লিবারেল পার্টির জনপ্রিয়তা কমে যায়।
২০২৪ সালের উপনির্বাচনে একাধিক পরাজয়, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং আবাসন সংকট জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এমন বাস্তবতায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রুডো পদত্যাগ করেন এবং মার্চে সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর মার্ক কার্নি লিবারেল পার্টির নেতা নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে পার্টি পায় নতুন গতিপথ।
বিরোধী দল কনজারভেটিভদের ইমিগ্রেশন নীতিতে কঠোর অবস্থান, স্থায়ী অভিবাসন কমানো, অস্থায়ী কর্মী ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমিয়ে দেয়ার ঘোষণা, ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ও বিচক্ষণ ভোটারদের ক্ষুব্ধ করেছে। তা ছাড়া ফিলিস্তিনের ইস্যুতে তাদের নীরবতা মুসলিম ও মানবাধিকার সচেতন অংশের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। তাই বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়েও ভোটের আগে পিছিয়ে যেতে হয় কানজারভেটিভদের।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভোটের ফলাফল মিলবে। এখন দেখার পালা কোনদিকে জনগণ রায় দেয়। কারণ এরই মধ্যে রেকর্ড ৭ দশমিক ৩ মিলিয়নের বেশি মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন।
Leave a comment