ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারতীয় বাহিনী মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে সামরিক অভিযানের নামে, বেসামরিক নিরীহ জনগণের ওপর নির্যাতন চাল্লাচ্ছে। ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে বাড়ি-ঘরেও।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা রোববার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পেহেলগামের সেই হামলার পর জম্মু-কাশ্মীরে অন্তত ৯টি বসত বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। যদিও ভারতীয় বাহিনীর দাবি, ভেঙ্গে ফেলা বাড়িগুলো স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীদের।
ফারুক তিদা নামের এক স্বাধীনতাকামী যোদ্ধার আত্মীয় বলেছেন, ‘ভারত এখন ইসরায়েলি কৌশল অবলম্বন করছে। তারা ইসরায়েলিদের মতো ঘর-বাড়ি ধ্বংস করছে।’
তিনি জানান, ফিলিস্তিনি কোনো স্বাধীনতাকামী ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা চালালে দখলদাররা যেমনভাবে গাজার বাড়ি-ঘর ধ্বংস করে দেয়, তেমনভাবেই ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরে একই কাজ করছে; যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ।
ভারতীয় সেনারা ফারুক তিদার বাড়ি ধ্বংস করার পর তার আত্মীয় ক্ষোভ জানিয়ে আলজাজিরাকে বলেন, ‘স্থানীয়দের শাস্তি দিতে এগুলো ইসরায়েলি কৌশল। এই নিরীহ পরিবারগুলোর কী দোষ?
এই বাড়িগুলোর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীদের কোন সম্পর্ক নেই। যখন বিদ্রোহীরা বাড়ি ছাড়ে, তখন তারা তাদের পরিবারদেরও ছেড়ে যায়।’
ফারুক তিদা ‘লস্কর-ই-তৈয়বায়’ যোগ দিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। গত রোববার তার পারিবারিক বাড়িটি বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। ফারুক তিদার পরিবার জানিয়েছে, তিনি ১৯৯০ সালের দিকে পাকিস্তানে চলে যান। এরপর আর কখনো ফিরে আসেননি।
দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা গ্রামের স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনারা সন্দেহভাজন বিদ্রোহী আহসান শেখের বাড়িও ধ্বংস করেছে। পুলিশের দাবি তিনিও ‘লস্কর-ই-তৈয়বার’ সদস্য। তবে তার বাড়িটি ধ্বংস করতে গিয়ে ভারতীয় সেনারা আরও ১২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করছে ।
তাদের একজন আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘আমরা ইশার নামাজ পড়ছিলাম। তখন তারা আমার প্রতিবেশীর বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটায়। আমাদের নিজের বাড়ি এবং পাশে থাকা আরও এক ডজন বাড়িও ধ্বংস হয়েছে। আমাদের কী দোষ ছিল। আমরা এখন কী করব জানি না। তারা শুধুমাত্র আমাদের প্রতিবেশী ছিল।’
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী পেহেলগামে হামলার পর জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় গণ-গ্রেফতার চালাচ্ছে । এ নিয়ে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সেখানকার মানুষের মধ্যে।
Leave a comment