
কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, হামলাকারী ও তাদের মদদদাতাদের ‘পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত’ তাড়া করে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিহারের এক নির্বাচনী জনসভায় নিহত ২৬ জনের স্মরণে নতশিরে প্রার্থনা করেন মোদি, এবং উপস্থিত জনতাকেও তাঁদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে বলেন।
হামলার ঘটনায় ভারতীয় পুলিশ জানায়, জড়িত বন্দুকধারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছে। যদিও মোদি তাঁর বক্তব্যে সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি, তবে কূটনৈতিক ও সামরিক পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে।
ভারত সরকার এরই মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সংকুচিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। বুধবার ছয় দশকের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা হয়েছে এবং ওয়াঘা সীমান্ত সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তকে ‘জলযুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে কড়া ভাষায় নিন্দা জানান।
কাশ্মীর পুলিশের প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে তিনজন সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম ও স্কেচ প্রকাশ করে তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক বলে জানালেও কীভাবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, এই হামলা বিগত দুই দশকের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অন্যতম ভয়াবহ হামলা। তিনি বলেন, সরকার এই হামলায় আন্তসীমান্ত সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করছে। এর প্রেক্ষিতে ইসলামাবাদ থেকে সব প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার এবং পাকিস্তানি দূতাবাসে কর্মী সংখ্যা হ্রাসের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর মোদি সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেছেন, যেখানে বিরোধী দলগুলোকে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করা হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদির এই বক্তব্য এবং পরবর্তী পদক্ষেপ কাশ্মীর পরিস্থিতিকে নতুন করে উত্তপ্ত করতে পারে এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ।
Leave a comment