মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পর্যটন কেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে এক নৃশংস জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু পর্যটক। এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, প্রতিবারই হামলার পর পাকিস্তানের দিকেই দোষ চাপানো হয়। এবারও বলা হচ্ছে, হামলাকারীরা পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তবে অনেকের মতে, এই যুক্তি জাতীয়তাবাদের আবরণে সাধারণ ভারতীয়দের বিভ্রান্ত করার একটি সহজ কৌশল।
বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীরকে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করলেও মোদি প্রশাসন এই হামলা প্রতিরোধে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, রাজনৈতিক স্বার্থে কাশ্মীরকে ব্যবহার করলেও বাস্তবিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো সবই তাদের দেশীয় বিদ্রোহ। তাদের বিভিন্ন রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চলছে। একটা নয়, দুটো নয় কয়েক ডজন রাজ্যে- নাগাল্যান্ড থেকে কাশ্মীর, দক্ষিণে, ছত্তিশগড়ে, মণিপুরে।” তিনি বলেছেন, “পাকিস্তান সব সময় যে কোনো ধরনের সন্ত্রান্সের বিরুদ্ধে।”
অন্যদিকে, ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক হাই কমিশনার আব্দুল বাসিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন , “আমি আত্মবিশ্বাসী যে ভারতের যেকোনো ধরনের দুঃসাহসিক কাজ ব্যর্থ করতে পাকিস্তান সবভাবে প্রস্তুত। আমার কোনো সন্দেহ নেই যে এবার পাকিস্তানের তরফে যথাযোগ্য জবাব দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত , হামলার খবর পাওয়া মাত্রই প্রধানমন্ত্রী মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরেন। দিল্লি বিমানবন্দরে নেমেই তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন।
একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন। রাতেই তিনি শ্রীনগর পৌঁছে নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মোদি সামাজিক মাধ্যম এক্স এ (টুইটার) পোস্ট করে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই জঘন্য হামলার পেছনে যারা রয়েছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। ভারতের লড়াই আরও কঠোর হবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ।’
Leave a comment