কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ সেই হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছেন পল্লবী নামের এক নারী। সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হওয়ার সেই অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
২৩ এপ্রিল (বুধবার ) এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবারের হামলায় পল্লবীর স্বামী মঞ্জুনাথ নিহত হয়েছেন। ওই সময় পল্লবী এবং তার ছেলে সন্ত্রাসীদের হাতের নাগালে থাকলেও তাদের ইচ্ছেকৃতভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়। এমনকি সন্ত্রাসীরা তাদের কোনো আঘাতও করেনি ।
পল্লবী জানান, তিনি এবং তার ১৮ বছর বয়সী ছেলে উভয়েই সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবে সন্ত্রাসীরা তাদের কোনো আঘাত করেনি।
এর বদলে সন্ত্রাসীরা বলেছে, তারা তাদের কোনো ক্ষতি করবে না। “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ সম্পর্কে অবহিত করার জন্য তাদের বাঁচিয়ে রাখবে”।
ফোনে পল্লবী বলেন, আমরা পহেলগাঁওয়েআছি। আমার স্বামী আমার সামনেই মারা গেছেন। আমি কাঁদতে বা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারিনি। আমি বুঝতেও পারিনি যে কী ঘটেছে। আমি কর্ণাটকের শিবমোগা থেকে আমার স্বামী মঞ্জুনাথ এবং আমাদের ছেলে অভিজেয়ার সাথে এখানে এসেছিলাম।
তিনি বলেন, আমি লক্ষ্য করলাম আক্রমণকারী তিন থেকে চারজন ছিল।
আমার স্বামী নিহত হওয়ার পর আমি একজন সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়ে বললাম, মেরে পাটি কো মারা হ্যায় না, মুঝে ভি মারো (তুমি আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছ, আমাকেও মেরে ফেলো)। আমার ছেলেও তার মুখোমুখি হয়ে বলল, কুত্তে, মেরে বাবা কো মারা, হামে ভি মার দালো (কুকুর, তুমি আমার বাবাকে মেরে ফেলেছ, আমাদেরও মেরে ফেলো)।
পল্লবী বলেন, সন্ত্রাসী উত্তর দিল- নাহিন মারেঙ্গে। তুম মোদি কো জাকে বোলো(আমি তোমাকে মারব না। মোদিকে গিয়ে বলো)।
দৃশ্যটি আরও বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আমাদের সামনেই ছিল। তারা সেনাবাহিনীর পোশাকে ছিল না। প্রায় সব পুরুষকেই লক্ষ্যবস্তু করে গুলি করছিল তারা। অনেক নববিবাহিত দম্পতি ছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেবল স্বামীদের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। নারী এবং অন্যরা বেঁচে গিয়েছিলেন।
এর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এক এক্স বার্তায় ওই ফোন কলের কথা উল্লেখ করেন। জয়সোয়াল বলেন, ট্রাম্প এই হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমেরিকা ভারতের পাশে রয়েছে এবং সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছেন।
Leave a comment