ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস (৮৮) মারা গেছেন।ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল এক বিবৃতিতে জানান, স্থানীয় সময় সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে রোমের বিশপ ফ্রান্সিস ঈশ্বরের কাছে ফিরে গেছেন। তার পুরো জীবন ছিল প্রভু ও চার্চের সেবায় উৎসর্গিত।
দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তরুণ বয়সে তার একটি ফুসফুস আংশিক অপসারণ করা হয়েছিল। ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে রোমের গেমেলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু হয়ে পরে তা ডাবল নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়।
হাসপাতালটিতে তিনি ৩৮ দিন ছিলেন—যা তার ১২ বছরের পোপজীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ চিকিৎসা ছিল।
আর্জেন্টিনার বাসিন্দা হোর্হে মারিও বারগোলিও ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ, এক বৃষ্টিভেজা রাতে পোপ হিসেবে নির্বাচিত হন।
তার প্রথম বক্তব্য ছিল সাধারণ এক বুয়োনাসেরা (ইতালিয়ান ভাষায় শুভ সন্ধ্যা)—যা তার নম্র ও মানবিক রূপের ইঙ্গিত দিয়েছিল। তিনি গরিবদের পাশে দাঁড়ানো, শরণার্থীদের আলিঙ্গন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসার মাধ্যমে ভিন্নধর্মী এক পোপ হিসেবে পরিচিত হন।
তবে তার খোলামেলা বক্তব্য, এলজিবিটিকিউ+ ক্যাথলিকদের প্রতি সহানুভূতি, পুঁজিবাদের সমালোচনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অনেক রক্ষণশীলদের অসন্তুষ্ট করেন।
২০১৮ সালে চিলির এক পুরোহিতের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন,যা তার পোপজীবনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় পুরো বিশ্ব যখন লকডাউনে, তখন ফাঁকা সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, আমরা সবাই একই নৌকায় আছি—দুর্বল ও বিভ্রান্ত। আমাদের একে অপরকে সহানুভূতি দিয়ে পাশে থাকতে হবে।
পোপ ফ্রান্সিস তার সরলতা, সহানুভূতি এবং গঠনমূলক চিন্তাভাবনার জন্য বিশ্বজুড়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন।
ক্যাথলিক চার্চসহ বিশ্বজুড়ে তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Leave a comment