বিতর্কিত মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাসের প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। রাজ্যসভা ও লোকসভায় পাস হওয়া এই বিলের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পথে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছে যে, মণিপুরে বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
রবিবার সন্ধ্যায় মণিপুরের থৌবাল জেলার লিলং এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে বিজেপি নেতা আসকার আলীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাকে এই বিতর্কিত বিলে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এ সময় স্থানীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে আয়োজিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ।
ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘প্রতিবাদ দমনমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন।
জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায়ও বিষয়টি ঘিরে হট্টগোল হয়। ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) একটি মুলতবি প্রস্তাব আনার চেষ্টা করলে স্পিকার আবদুল রহিম রাথের জানান, বিলটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় এটি নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। এতে বিরোধী দলগুলি ক্ষোভ প্রকাশ করে।
বিজেপির পক্ষ থেকে সুনীল শর্মা বলেন, “বিলটি পার্লামেন্ট পাস করেছে এবং রাষ্ট্রপতি তাতে স্বাক্ষর করেছেন। এখন এটি একটি আইন। বিধানসভায় তা নিয়ে আলোচনা করার এখতিয়ার নেই।”
ভারতের ধর্মীয় ও দাতব্য কাজে দানকৃত মুসলিম সম্পত্তি—যা ওয়াকফ নামে পরিচিত—সেগুলোর ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই বিলের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শত শত কোটি ডলারের ওয়াকফ সম্পত্তি এখন কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে। এর ফলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বায়ত্তশাসন হুমকিতে পড়তে পারে।
এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। জামায়াত-ই-উলেমা হিন্দ-এর সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানি-র রুজুকৃত মামলায় আইনজীবী কপিল সিবাল প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না-র আদালতে দ্রুত শুনানির আবেদন করেন। কিন্তু আদালত এখনই শুনানিতে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।
সিবাল বলেন, “আইনটি সাংবিধানিকভাবে অত্যন্ত বিতর্কিত। এর প্রভাব সমাজের একটি বড় অংশের উপর পড়ছে।
Leave a comment