মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বাণিজ্য নীতি ও বাড়তি শুল্কারোপের সিদ্ধান্তগুলোকে কেন্দ্র করে বৈশ্ব্বিক অর্থনীতিতে এক বিশাল ধসের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ৭ এপ্রিল এশিয়া ও অন্যান্য শেয়ার বাজার খুললে বড় ধরনের ধস আসে।
ভারতের পুঁজিবাজারে এ দিন ৪০০০ পয়েন্ট পতন হয় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (BSE)-এ, এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (NSE)-এর নিফটি সূচক ১০০০ পয়েন্ট কমে যায়, যা গত ১০ মাসে ভারতের শেয়ার বাজারের সবচেয়ে বড় পতন।
বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, মাত্র ১০ সেকেন্ডেই ভারতের পুঁজিবাজার থেকে মিলিয়ে গেছে আনুমানিক ২০ লাখ কোটি রুপি। পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জও লেনদেন বন্ধ করে দেয় যখন বেঞ্চমার্ক শেয়ার সূচক ৫ শতাংশ পড়ে যায়।
বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাজারেও ধস নেমেছে। জাপানের নিক্কি ২২৫ সূচক ২৬০০ পয়েন্ট পড়ে, এবং হংকং-এর হ্যাংস্যাং সূচক ৯.৮ শতাংশ কমে যায়। বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারে ধসের পাশাপাশি, HSBC ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের শেয়ারে ব্যাপক পতন দেখা গেছে।
এদিকে, ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকা শুল্কারোপের প্রভাব ইতিমধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সুনামির মতো অনুভূত হচ্ছে। এতে দেশগুলো জোরদার কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫০টিরও বেশি দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছে, এবং কিছু রাষ্ট্রপ্রধান জনগণকে আতঙ্ক কাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
তবে, এই সঙ্কটের মাঝেও ট্রাম্প তার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছেন না। তিনি বলেছেন, “বাজারে কী হচ্ছে তা আমি জানি না, তবে আমি নিশ্চিত যুক্তরাষ্ট্র আরো শক্তিশালী হবে। পরিশেষে এটি এমন একটি দেশ হবে, যার সাথে অন্য কোনো দেশের তুলনা হবে না। এটি হবে অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ।”
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং শেয়ারবাজারের এই ধস ভবিষ্যতে আরও জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। বিনিয়োগকারীদের মনে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার ছাপ স্পষ্ট, যেখানে অধিকাংশেই মনে করছেন, বাণিজ্য যুদ্ধে কোন পক্ষই বিজয়ী হবে না।
Leave a comment