ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবার সরব হলেন মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ ইসলামিক ব্যক্তিত্বরা। আন্তর্জাতিক মুসলিম স্কলার্স ইউনিয়ন (IUMS)-এর মহাসচিব আলী আল-কারদাঘি এক ‘বিরল ফতোয়ায়’ বিশ্বব্যাপী মুসলিম এবং মুসলিমপ্রধান দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন— ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, গাজায় ১৭ মাস ধরে চলমান ইসরায়েলি সহিংসতা, হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এ ফতোয়া জারি করা হয়।
১৫ ধারার বিশদ ফতোয়াটিতে আলী আল-কারদাঘি বলেন, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া আরব ও ইসলামিক সরকারের চরম ব্যর্থতা। এটা ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী একটি বড় ধরনের অন্যায়।
আলী আল-কারদাঘি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সম্মানিত ইসলামিক স্কলারদের একজন। প্রখ্যাত আলেম ইউসুফ আল-কারদভীর উত্তরসূরি হিসেবে IUMS-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার এই ফতোয়াকে বিশ্বজুড়ে ১৭০ কোটির বেশি সুন্নি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ফতোয়ায় আরও বলা হয়— ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। সুয়েজ খাল, বাব আল-মান্দাব, হরমুজ প্রণালী কিংবা কোনো সমুদ্র, স্থল বা আকাশপথে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র পরিবহন চলবে না।
তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে অবরোধ আরোপ করতে।
এই ফতোয়াকে সমর্থন করেছেন আরও ১৪ জন প্রভাবশালী ইসলামিক চিন্তাবিদ ও আলেম। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর যেসব শান্তিচুক্তি রয়েছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনারও দাবি জানিয়েছেন।
বিশেষ করে এই চাপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন গাজায় মুসলিমদের ওপর চলমান সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন— এমন প্রত্যাশাও উঠে এসেছে ফতোয়ায়।
উল্লেখ্য, ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী ফতোয়া হলো এক ধরনের নৈতিক ও ধর্মীয় নির্দেশনা, যা সাধারণত কোরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে বড় মাপের আলেমরা দিয়ে থাকেন। যদিও এটি আইনত বাধ্যতামূলক নয়, তবে মুসলিম সমাজে এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
বিশ্বের মুসলিম জনমতকে একত্র করার লক্ষ্যে এই ফতোয়া একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন ফিলিস্তিন সংকট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
Leave a comment