জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পাঠানো পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিক মতামত দেয়নি। দলটি বিশ্বাস করে, নির্বাচিত সংসদই রাষ্ট্র সংস্কার করবে, এবং এই নীতিগত অবস্থান থেকেই তারা তাদের মতামত প্রস্তুত করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের মৌলিক সংস্কারে বিএনপির আপত্তি নেই। তবে সংবিধানের মৌলিক সংস্কারে হাত দিলে তা নির্বাচন বিলম্বিত করতে পারে, এজন্য এ ধরনের সংস্কার প্রক্রিয়ায় বিএনপি একমত নয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি পাঠিয়ে সংস্কার সুপারিশের ওপর মতামত চেয়েছিল। ১৫টি দল ইতোমধ্যে মতামত জমা দিয়েছে, আর বিএনপিসহ ১৪টি দল আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাদের মতামত জানাবে।
বিএনপি তাদের দলীয় অবস্থান চূড়ান্ত করতে নীতিনির্ধারণী পর্ষদের বৈঠক করেছে। গত রোববার দলের স্থায়ী কমিটির সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বিএনপির চূড়ান্ত মতামত নির্ধারণ করা হয়।
বিএনপির সূত্র জানায়, দলটি সংবিধান সংস্কারের অধিকাংশ প্রস্তাবকে সমর্থন করবে, তবে দলীয় অবস্থান হলো, সংবিধান সংস্কারের এখতিয়ার নির্বাচিত সংসদের। তারা মনে করে, আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন।
বিএনপি ইতোমধ্যে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ও ‘গণপরিষদ নির্বাচন’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। দলটি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রাদেশিক সরকার ফর্মুলা, এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিরোধী। বিএনপি একই ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এমন প্রস্তাব দেবে এবং প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে সুপারিশ রাখবে।
বিএনপি শিগগিরই তাদের মতামত কমিশনে জমা দেবে এবং আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা প্রকাশ করবে।
Leave a comment