Home Uncategorized ভারতের ঋণে দুই সড়ক, বাংলাদেশের লাভ নিয়ে প্রশ্ন
Uncategorized

ভারতের ঋণে দুই সড়ক, বাংলাদেশের লাভ নিয়ে প্রশ্ন

Share
Share

ভারতের ঋণে (এলওসি) আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল, কসবা, ধরখার হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণ চলছে। ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ আরও সহজ হবে। পাশাপাশি, ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকায় কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ধরখার সড়কও চার লেনে উন্নীত করা হবে। এতে ভারতীয় পণ্য পরিবহন সুবিধা বাড়বে। তবে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছেন, এতে বাংলাদেশের কতটুকু লাভ?
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির জানিয়েছেন, প্রকল্পগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূলে না হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে ২০১৫ সালে নৌ-ট্রানজিট চুক্তি সই হয়। এরপর ২০১৭ সালে আশুগঞ্জ-আখাউড়া মহাসড়ক প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এটি ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ব্যয় ও সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এখন ২০২৫ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা।
এ প্রকল্পে ভারত ২ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে, আর বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। তবে ঋণের শর্ত অনুযায়ী, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ পেয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ভারতীয় কর্মীরা দেশে ফিরে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা ফিরে এসে পুনরায় কাজ শুরু করেছে।
ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় ভারত চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারছে। এতে প্রতি টন পণ্যের জন্য ভারতকে মাত্র ১ টাকা ৮৫ পয়সা করে কিলোমিটারপ্রতি মাশুল দিতে হয়। কুমিল্লার ময়নামতি থেকে আখাউড়া পর্যন্ত সড়ক উন্নীত হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতীয় পণ্য সহজেই ত্রিপুরা ও আসামে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাদীউজ্জামান বলেন, “প্রকল্প অনুমোদনের সময় যে লাভজনক দেখানো হয়, বাস্তবে তা নাও হতে পারে। এ প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাংলাদেশকে বহন করতে হবে, যা ভারতীয় পণ্য পরিবহনের আয় থেকে পূরণ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।”
সড়ক নির্মাণে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংলগ্ন ১১ কিলোমিটার সেচ খাল ভরাট করা হয়েছে, যা ৫০ হাজার একর জমির সেচ ব্যবস্থাকে ব্যাহত করেছে। এতে কৃষকের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রকল্প হলেও এতে ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থই বেশি প্রতিফলিত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে মূল্যায়ন না করে বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বোঝা আরও বাড়তে পারে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

বাড়ি ফেরার আগেই কারাগারে মৃত্যু, অবশেষে দেশে গেল বিজলির লাশ

ভারতের নাগরিক বিজলি রায় (৪০) চার বছর আগে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে ছয় মাসের সাজা পান। তবে, পরিবারের খোঁজ না মেলায় তিনি...

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অঙ্গীকার করেছেন যে, রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে...

Related Articles

হরর সিনেমা দেখলেই কমবে ২০০ ক্যালরি!

আপনি কি জানেন, ৯০ মিনিটের ভয়ঙ্কর, গা ছমছমে কোনো হরর সিনেমা দেখলে...

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন নয়, বিচারের আওতায় আনতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, রাজনীতিতে আওয়ামী...

সিলেটে ফুটপাথ দখল নিয়ে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের ঠেলাঠেলি

সিলেটের ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। সিটি কর্পোরেশন ও...

সীমান্তে আমাদের লোক হত্যা হলে তার প্রতিশোধ নিতে হবে – ডা. তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির এবং সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ...