সিলেটের ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ—কেউ-ই দায়িত্ব নিতে চাইছে না। ফলে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে হকারদের দখল দিন দিন বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ীরা একাধিকবার আলটিমেটাম দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং হকাররা উল্টো চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সড়কে আন্দোলন করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে। প্রায় ৫ হাজার হকার ইতিমধ্যে ফুটপাথ দখলে নিয়েছে। থানা, ফাঁড়ি পুলিশ, রাজনীতিবিদ, দালাল চক্র, ব্যবসায়ীদের একাংশ—সবাই এই ফুটপাথ ব্যবসা থেকে অর্থ উপার্জন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হকাররা জানায়, প্রতিদিন ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়, যা পুলিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছেও পৌঁছায়। টাকা না দিলে হকারদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। গত বছর রমজানের আগে তৎকালীন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর উদ্যোগে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে হকারদের জন্য হকার্স মার্কেট মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছিল। তখন হকাররা সড়ক ছেড়ে সেখানে গেলেও, পরে আবার ফুটপাথে ফিরে আসে। সিটি কর্পোরেশন বলছে, আইন অনুযায়ী ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদের দায়িত্ব পুলিশের, কিন্তু পুলিশ বলছে, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অভিযান চালানো উচিত। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, “নগর কর্তৃপক্ষ যদি চায়, আমরা যথাযথ পুলিশি সহায়তা দেবো। তবে সম্মিলিত উদ্যোগ না নিলে ফুটপাথ দখলমুক্ত করা সম্ভব নয়।” এদিকে সচেতন নাগরিক সমাজ ও ব্যবসায়ীদের দেওয়া আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ। তাঁরা সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মারকলিপি দেবেন এবং প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যবসায়ী নেতারা মার্কেট ও দোকানমালিকদের আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তাঁরা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের সামনে হকার বসতে না দেন। নগরবাসী মনে করছেন, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থজড়িত থাকার কারণে ফুটপাথ দখলমুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে নাগরিক সমাজ ও ব্যবসায়ীরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে হয়তো সিলেটের ফুটপাথ ফিরে পাওয়া সম্ভব।
Leave a comment