মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে দেনমোহর পরিশোধের ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন কুমিল্লার পারিবারিক আদালত। আদালত দুই লাখ টাকা দেনমোহরের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করেছেন ২ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এই অর্থ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লার পারিবারিক আদালতের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ শেখ সাদী রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর সরকারি কৌঁসুলি বদিউল আলম সুজন। তিনি একে ‘ব্যতিক্রমী ও যুগান্তকারী’ রায় বলে অভিহিত করেছেন।
২০২২ সালে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার সুমাইয়া আক্তার ও ইব্রাহিম খলিলের বিয়ে হয়। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয় এবং বাকি ২ লাখ টাকা দেনমোহর হিসেবে রয়ে যায়। ২০২৩ সালের জুনে ইব্রাহিম খলিল তালাক দেন। এরপর সুমাইয়া দেনমোহর ও ভরণপোষণের জন্য কুমিল্লা পারিবারিক আদালতে মামলা করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজাদ হোসেন বলেন, “বিয়ে হয়েছিল ২০২২ সালে, এখন ২০২৫ সাল। মূল্যস্ফীতির কারণে টাকার মূল্য কমে গেছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারা প্রয়োগ করে এই সমন্বয় করা হয়েছে।”
দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারা অনুযায়ী, আদালতের সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা ও অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব।
ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার বলেন, “আদালত থেকে এমন ন্যায়বিচার পাব ভাবিনি। অনেকে বলেছিলেন, মামলা করে লাভ নেই। কিন্তু এখন আমার ন্যায্য পাওনা ফেরত পাচ্ছি।”
নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর সরকারি কৌঁসুলি বদিউল আলম সুজন বলেন, “বিয়ে বিচ্ছেদের পর দেনমোহর না পেয়ে নারীদের অনেক বঞ্চনার শিকার হতে হয়। আদালতের এই যুগান্তকারী রায় নারী সমাজের জন্য বড় দৃষ্টান্ত।”
Leave a comment