সন্ত্রাসবাদের প্রভাব কমায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে (জিটিআই) বাংলাদেশের অবস্থান উন্নত হয়েছে। ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড পিস প্রকাশিত ১২তম বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তুলনায় কম ছিল।
২০২৫ সালের জিটিআই সূচকে বাংলাদেশ ৩.০৩ স্কোর পেয়েছে, যেখানে শূন্য মানে কোনো প্রভাব নেই এবং ১০ বোঝায় সর্বোচ্চ প্রভাব। এই স্কোরের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ৩৫তম স্থানে রয়েছে, যা আগের বছরের ৩২তম স্থান থেকে উন্নতি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ৫৮ থেকে বেড়ে ৬৬টিতে পৌঁছেছে। ৪৫টি দেশের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, অন্যদিকে ৩৪টি দেশে উন্নতি হয়েছে। চারটি প্রধান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহিংসতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ১১ শতাংশ বেড়েছে।
বুরকিনা ফাসো এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসবাদের শিকার দেশ। যদিও সেখানে হামলা ও প্রাণহানির হার যথাক্রমে ৫৭% ও ২১% কমেছে, তবে বিশ্বের মোট সন্ত্রাসবাদজনিত মৃত্যুর এক-পঞ্চমাংশ এই দেশেই ঘটেছে।
দক্ষিণ এশিয়া ২০২৪ সালেও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসবাদের শিকার অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম কমে যাওয়ায় সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ, যার জিটিআই স্কোর ৮.৩৭৪ এবং বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান। আফগানিস্তান ৭.২৬২ স্কোর নিয়ে নবম, আর ভারত ৬.৪১১ স্কোর নিয়ে ১৪তম স্থানে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি মূল্যায়নকৃত দেশের মধ্যে ভুটান ও শ্রীলঙ্কার স্কোর শূন্য, অর্থাৎ সেখানে গত পাঁচ বছরে কোনো সন্ত্রাসী হামলা হয়নি। নেপাল ১.১১৩ স্কোর নিয়ে ৬৮তম স্থানে, আর তার পরেই রয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের এই উন্নতি সন্ত্রাসবাদ দমনে কার্যকর নীতির প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
Leave a comment