জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ ছয়টি পদ অনেকটাই চূড়ান্ত হয়েছে। সাংগঠনিক কাঠামোয় ‘সমঝোতার’ ভিত্তিতে নতুন দুটি পদও সৃষ্টি করা হয়েছে। আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠকের পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নামে দুটি নতুন পদ সংযোজন করা হয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন দলের শীর্ষ পদগুলোতে আসছেন। এই দলের আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামের মনোনয়ন নিয়ে কারও আপত্তি নেই। সদস্যসচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি বর্তমানে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব।
দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ আসতে পারেন। শীর্ষ ছয়টি পদের বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক রায়, মাহবুব আলম ও অলিক মৃ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পাবেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটিতে থাকা ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আলী আহসান জোনায়েদের নাম বিবেচনায় রয়েছে। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নাম প্রায় নিশ্চিত।
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ২৬ ফেব্রুয়ারি
নতুন রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ২৬ ফেব্রুয়ারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলীয় ঘোষণা দেওয়া হতে পারে, তবে বড় জমায়েতের পরিকল্পনা আপাতত নেই।
দলের প্রস্তুতি কমিটি ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে, যেখানে শতাধিক নেতা যুক্ত আছেন। গত বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দীর্ঘ বৈঠকে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান সামনে রেখে বিভিন্ন দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।
নতুন ছাত্রসংগঠনের যাত্রা
নতুন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি চলতি সপ্তাহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে নতুন একটি ছাত্রসংগঠন আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। যদিও এটি নতুন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, এর নেতারা দাবি করেছেন, তারা স্বতন্ত্রভাবে কাজ করবেন।
নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ দুটি পদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক দুই সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও জাহিদ আহসান আসতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বে আবদুল কাদের ও সানজানা আফিফা অদিতির নাম বিবেচনায় রয়েছে।
এই ছাত্রসংগঠনের লক্ষ্য হবে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’ ও ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ নীতির ওপর ভিত্তি করে ছাত্র-নাগরিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। সংগঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা যেকোনো দিন আসতে পারে।
ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে এই ছাত্রসংগঠন সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। সম্ভাব্য ভিপি ও জিএস প্রার্থী হিসেবে আবদুল কাদের ও আবু বাকেরের নাম আলোচনায় রয়েছে।
নতুন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রসংগঠনের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ হতে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
Leave a comment