বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য, শিল্প, সাংবাদিকতা, গবেষণা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা গুণীজনদের স্বীকৃতি জানাতে ১৯৭৭ সালে সরকার চালু করে একুশে পদক। মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রবর্তিত হয়, যা প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারির আগে ঘোষণা করা হয়। সময়ের পরিক্রমায় এটি দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
একুশে পদকের সূচনা ঘটে ১৯৭৭ সালে, ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের দেওয়া হয়, যাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে গেছেন। শুরুতে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হলেও পরে এর পরিধি বৃদ্ধি পায়।
প্রতিবছর সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে একুশে পদকের জন্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হয়। গুণীজনদের কাজের গুরুত্ব ও অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে বাছাই কমিটি যোগ্যদের নির্বাচন করে। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদনের পর বিজয়ীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
শুরু থেকে একুশে পদক পেয়েছেন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যাঁদের অবদান জাতি চিরদিন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। সাহিত্য, শিল্প, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, ভাষা আন্দোলনসহ নানা ক্ষেত্রে খ্যাতিমান ব্যক্তিরা এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। কবি শামসুর রাহমান, সুরসম্রাজ্ঞী ফেরদৌসী রহমান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, লেখক সেলিনা হোসেন, সাংবাদিক আতাউস সামাদসহ অসংখ্য গুণী ব্যক্তিত্ব এই সম্মান পেয়েছেন।
একুশে পদক শুধু একটি স্বীকৃতি নয়, এটি দেশের কৃতীদের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার প্রতীক। ভবিষ্যতে আরও নতুন ক্ষেত্রে এই পুরস্কার দেওয়া হলে সমাজের আরও বিস্তৃত পরিসরে অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব হবে।
একুশে পদক প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তার গুণীজনদের যথাযথ সম্মান জানিয়ে আসছে। এটি শুধু রাষ্ট্রীয় পুরস্কার নয়, বরং জাতির চেতনা ও সংস্কৃতির মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
Leave a comment