ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড তারল্য সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ১,০০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চেয়েছে। যদিও এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৪,০০০ কোটি টাকার সহায়তা প্যাকেজ পেয়েছিল ব্যাংকটি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল, কিন্তু মাত্র ৪,০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের দায় পরিশোধ করতে আমরা এখন অতিরিক্ত ১,০০০ কোটি টাকা চেয়েছি।”
এই সহায়তার জন্য ন্যাশনাল ব্যাংক ১০% সুদের হার প্রস্তাব করেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও এই অনুরোধ অনুমোদন করেনি বলে এক জ্যেষ্ঠ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
পূর্ববর্তী বিতর্ক সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে মিন্টু জানান, আগের বরাদ্দকৃত অর্থের ব্যয়ের বিষয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন তৈরির কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, “পূর্ববর্তী বোর্ডের দুর্নীতির কারণে ব্যাংকটি এই অবস্থায় পড়েছে। তবে বর্তমানে ব্যাংক পুনরুজ্জীবনের জন্য নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।”
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য সহায়তা হিসেবে মুদ্রণ করা অর্থের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ২২,৫০০ কোটি টাকা প্রবাহিত করেছিল। ন্যাশনাল ব্যাংক ছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক এই সহায়তা পেয়েছিল।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অতিরিক্ত তারল্য সহায়তার বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। কিছু কর্মকর্তার মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিলের মাধ্যমে প্রদত্ত অর্থ কার্যত মুদ্রিত অর্থের সমান, কারণ আয় ও ব্যয়ের মধ্যে বড় ব্যবধান বিদ্যমান।
এদিকে আরও কিছু ব্যাংক যেমন পদ্মা ব্যাংক (১,৩০০ কোটি টাকা) এবং জনতা ব্যাংক (১০,০০০ কোটি টাকা) তারল্য সহায়তার আবেদন করেছে, তবে তাদের এখনও কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি কিছু কারনে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। ২০২৩ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিকদার পরিবারের সদস্যসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে ৪৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছিল।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সঙ্গে ব্যর্থ একীভবনের চেষ্টা এবং নেতৃত্ব পরিবর্তনের পর বর্তমানে ব্যাংকটির বোর্ড বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর নেতৃত্বে রয়েছে। এই বোর্ড ব্যাংকটির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে।
Leave a comment