আইএমএফের ঋণ শর্ত পূরণে রাজস্ব আয় বাড়াতে সরকার ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এই পদক্ষেপে মূল্যস্ফীতিতে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
শনিবার এনবিআরের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির তালিকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই। ফলে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।”
বর্ধিত ভ্যাটের তালিকায় কী রয়েছে?
ওষুধ, গুঁড়ো দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, মিষ্টি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাওয়া, বিমানের টিকেট, সিগারেট ও তামাকসহ বেশ কিছু পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। যেগুলোর উপর বর্তমানে ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আছে, সেগুলোতে মোট ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা বলা হয়েছে।
কেন ভ্যাট বৃদ্ধি?
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে অর্থবছরের মাঝপথে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে ছাড় ও রাজস্ব সংগ্রহের প্রচেষ্টা
এনবিআর জানিয়েছে, গত চার মাসে চাল, আলু, পেঁয়াজ, চিনি, ডিম, খেজুর, ভোজ্যতেল ও কীটনাশকের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্ক ও কর ছাড় দেওয়ার ফলে রাজস্ব আয় কমে গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জনস্বার্থে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শুল্ক করহারে ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য খাত থেকে রাজস্ব সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাজেট ঘাটতি রোধে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্কের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
মূল্যস্ফীতি ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব
এনবিআর আরও বলেছে, “যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়। তাই মূল্যস্ফীতিতে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব পড়বে না।”
নতুন উদ্যোগে সম্ভাব্য ফলাফল
এনবিআর আশা করছে, ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি আয়করের আওতা বৃদ্ধি এবং কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে সরে আসার উদ্যোগে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকারের লক্ষ্য হলো অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা এবং বাজেট ঘাটতি পূরণ করা।
Leave a comment