জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফোনকলের অধিকাংশই সেবা প্রত্যাশার সঙ্গে সম্পর্কহীন। গত আট বছরে ৯৯৯–এ আসা ৬ কোটি ২৩ লাখের বেশি কলের মধ্যে প্রায় ৫৬ শতাংশ কল ছিল অপ্রয়োজনীয়, যা প্রকৃত জরুরি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৯৯৯ সেবায় মোট ৬ কোটি ২৩ লাখ ৮০ হাজার ৯০৭টি কল আসে। এর মধ্যে ২ কোটি ৭২ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৬টি কলের ভিত্তিতে জরুরি মুহূর্তে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা দেওয়া হয়েছে। যা মোট কলের ৪৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। তবে ৩ কোটি ৫১ লাখ ১ হাজার ২১টি কলের সঙ্গে জরুরি সেবার কোনো যোগসূত্র ছিল না। যা মোট কলের ৫৬ দশমিক ২৭ শতাংশ।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, এমন অপ্রয়োজনীয় কলগুলোর কারণে প্রকৃত বিপদে পড়া ব্যক্তিরা অনেক সময় সঠিক সময়ে সেবা পেতে ব্যর্থ হন। এতে করে জনগণের মধ্যে ৯৯৯ সেবার প্রতি আস্থা ও নির্ভরতা ক্ষুণ্ন হওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১-এর ৭০(১) ধারায় অপ্রয়োজনীয় বা বিরক্তিকর কল করার জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা বা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবুও এখন পর্যন্ত ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ কাউকে এই আইনে অভিযুক্ত করেনি। বরং তারা নাগরিক সচেতনতার ওপর জোর দিচ্ছে।
৯৯৯ কর্তৃপক্ষ মনে করে, এই জরুরি সেবাটি সবার জন্য উন্মুক্ত ও বিনামূল্যে হলেও এর অপব্যবহার রোধে গণমাধ্যম ও সাধারণ নাগরিকদের সহযোগিতা জরুরি। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ৯৯৯ কোনো কৌতুক বা পরীক্ষা করার হটলাইন নয়, এটি জীবন রক্ষাকারী এক গুরুত্বপূর্ণ সেবা। তাই প্রকৃত প্রয়োজন ছাড়া এই নম্বরে ফোন না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৯৯৯ দেশের যেকোনো স্থান থেকে ফোন করে বিনামূল্যে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যায়। এই সেবাটি চালুর পর থেকে বহু মানুষ তাৎক্ষণিক সহায়তা পেয়েছেন এবং অনেক সময় জীবন রক্ষা সম্ভব হয়েছে। তবে অপব্যবহারের কারণে এই সেবাটি যেন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে না ফেলে—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a comment