যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার এক কারাগার থেকে অবশেষে মুক্তি পেলেন জোসেফ লাইগন। তাঁর বয়স এখন ৮৭ বছর। তিনি ছিলেন বিশ্বের দীর্ঘতম কারাভোগকারীদের একজন। ১৯৫৩ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়—যার কোনো প্যারোল ছিল না। এই রায় অনুযায়ী, তিনি ৬৭ বছর ৫৪ দিন জেল খেটেছেন।
ঘটনাটি ঘটে ১৯৫৩ সালের এক রাতে, ফিলাডেলফিয়ার একটি সংঘর্ষের ঘটনায়। যদিও লাইগন কখনও অপরাধে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেননি, তবে তিনি সবসময়ই বলে এসেছেন, কারও প্রাণ তিনি নেননি। তবু তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির বিধানই কার্যকর করা হয়।
লাইগনের মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়, যেখানে নাবালক অবস্থায় অপরাধ করায় মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দেওয়া সাংবিধানিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে জানায়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অসাংবিধানিক।
এই রায়ের পরও লাইগনের মুক্তি আসেনি সহজে। তাঁর মুক্তির জন্য দীর্ঘ আইনি লড়াই করতে হয়েছে। অবশেষে, কোনো প্যারোল বা নজরদারি ছাড়াই, একেবারেই স্বাধীনভাবে মুক্তি পান তিনি।
ছেলেবেলায় অপরাধে জড়িয়ে পড়া লাইগনের জীবনের সাত দশক কেটে গেছে কারাগারের দেয়ালের মধ্যে। বাইরে এসে তিনি দেখতে পান, একটি সম্পূর্ণ পাল্টে যাওয়া পৃথিবী।
তাঁর গল্প আজ বিশ্বের কাছে শুধুই একটি অপরাধের গল্প নয়, বরং অন্যায় বিচার প্রক্রিয়ার এক করুণ চিত্র, একজন মানুষের অসীম সহ্যশক্তি ও অপেক্ষার প্রতিচ্ছবি।
Leave a comment