ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হতে যাওয়া মহাকুম্ভ মেলার প্রধান আকর্ষণে পরিণত হয়েছেন সাধক গঙ্গাপুরি মহারাজ, যিনি গত ৩২ বছর ধরে গোসল করেননি। ভক্তদের কাছে ছোটুবাবা নামে পরিচিত এই সাধক তার অনন্য সংকল্পের জন্য ভক্ত ও তীর্থযাত্রীদের মধ্যে কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন।
আসামের কামাখ্যা পীঠের ৫৭ বছর বয়সী এই সাধক জানিয়েছেন, একটি বিশেষ সংকল্পের কারণে গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শরীরে পানি স্পর্শ করেননি। তবে এই জীবনধারার মাধ্যমে ভক্তদের ভিন্ন পথে হাঁটার পরামর্শ দেন তিনি। নিজে গোসল না করলেও ভক্তদের পবিত্র নদীতে স্নানের মাধ্যমে পূণ্য অর্জনে উৎসাহিত করছেন।
গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী নদীর মোহনায় অনুষ্ঠিতব্য মহাকুম্ভ মেলা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক মহাযজ্ঞ। এবার এই মেলা শুরু হবে ১৩ জানুয়ারি এবং চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা এই আয়োজনে প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৩ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার গঙ্গাপুরি মহারাজ তার অদ্ভুত জীবনযাপনের জন্য তীর্থযাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। মেলার প্রাঙ্গণে ছোটুবাবাকে ঘিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই আছে। সবাই তাকে দেখতে এবং তার কাছ থেকে আশীর্বাদ নিতে ব্যস্ত।
ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত এই মেলায় অংশ নিতে সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসছে। ১২ বছর পর পর আয়োজিত এই মেলায় তীর্থযাত্রীদের থাকার জন্য তাঁবু এবং ২০০টি বিলাসবহুল কটেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার এবং নাসিকে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে সনাতন ধর্মের আধ্যাত্মিক সাধক ও ভক্তদের মিলনমেলা ঘটে। মহাকুম্ভ মেলার এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন সারা বিশ্বের পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে।
সাধক গঙ্গাপুরি তার ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আমার সংকল্প আমার নিজস্ব, তবে আপনারা শুদ্ধ জীবনযাপন ও সৎ পথে চলুন।” তীর্থযাত্রীদের জন্য তার এই বার্তা আরও বেশি অনুপ্রেরণাদায়ক হয়ে উঠেছে।
মহাকুম্ভ মেলা শুধু আধ্যাত্মিকতার উৎসব নয়, এটি ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অনন্য উদাহরণ। আর এবারের মেলায় সাধক গঙ্গাপুরির উপস্থিতি এটি আরও স্মরণীয় করে তুলবে।
Leave a comment