১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল, ব্রিটিশ ভারতের প্রশাসনিক মানচিত্রে যুক্ত হয় নতুন একটি নাম—খুলনা জেলা। এদিন পূর্ববঙ্গের নদীবিধৌত অঞ্চলে গঠিত হয় খুলনা, যা পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
জেলার গঠন ছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসনের অংশ, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল কর আদায়, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশাসনিক কার্যকারিতা বাড়ানো। খুলনা জেলার মূল কাঠামো গড়ে ওঠে যশোর, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কিছু অংশ নিয়ে। পরবর্তীকালে এসব অঞ্চলই খুলনার প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক ভিত্তি নির্মাণে ভূমিকা রাখে।
খুলনার গঠন শুধু একটি প্রশাসনিক ইউনিটের সূচনা নয়, বরং একটি অঞ্চলের পরিচয়, সংস্কৃতি ও বিকাশের পথচলার সূচনাও ছিল। নদনদী, বনাঞ্চল এবং সমৃদ্ধ কৃষিপ্রধান অর্থনীতির কারণে এই এলাকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল ব্রিটিশদের চোখে। সুন্দরবনের সন্নিকটে হওয়ায় বনজ সম্পদ এবং নদীপথে যাতায়াত সুবিধাও খুলনাকে অনন্য করে তোলে।
গঠন পরবর্তী সময়ে খুলনায় শিল্প, বাণিজ্য এবং শিক্ষাব্যবস্থার বিস্তার ঘটে। বিশেষ করে নদীবন্দর ও রেলপথ নির্মাণ খুলনাকে গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যকেন্দ্রে রূপান্তর করে। আজকের খুলনা জেলা শুধু একটি প্রশাসনিক একক নয়, বরং এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক গেটওয়ে ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির একটি প্রতীক।
১৮৮২ সালের এই দিনটি তাই শুধু একটি তারিখ নয়—এটি খুলনার জন্ম, ইতিহাসের পাতায় যার প্রভাব আজও দৃশ্যমান।
Leave a comment