ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করার ঘটনায় নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে। পালানোর পর ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে তোলা তার একটি সেলফি ও ব্যবহৃত ফোন নম্বর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে মাসুদের একটি ছবি ও একটি ফোন নম্বর প্রকাশ করেন। ছবিটি ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে তোলা বলে দাবি করা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্যের পর সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হামলার পর ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তার সহযোগী মোটরবাইকচালক আলমগীর হোসেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। সীমান্ত পার হওয়ার পর মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে সহায়তা করেন জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব। তিনিই মাসুদের জন্য একটি ভারতীয় ফোন নম্বর সংগ্রহ করে দেন বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
এই ভারতীয় নম্বর ব্যবহার করেই মাসুদ রোববার রাতে একাধিক পরিচিত নম্বরে নিজের সেলফি পাঠান। গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই ছবিটি প্রযুক্তিগত নজরদারি ও যোগাযোগ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইন্টারসেপ্ট করা হয়েছে। ছবিতে মাসুদকে আসামের গুয়াহাটির একটি স্থানে দেখা যায়, যা তার ভারতে অবস্থানের বিষয়টি আরও জোরালোভাবে প্রমাণ করে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাসুদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, অর্থনৈতিক সহায়তা এবং সীমান্ত পারাপারের পেছনে থাকা নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি একটি সংগঠিত পালানোর ঘটনা, যেখানে একাধিক ব্যক্তি ও চক্র জড়িত থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোড এলাকায় এই হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা চলন্ত একটি রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এই ঘটনায় ওসমান হাদির পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ফয়সাল করিম মাসুদকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Leave a comment