হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় সাড়ে চার লাখ টাকার জাল নোটসহ দুই তরুণীকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাজারে জাল নোট দিয়ে প্রতারণা করতেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাতে উপজেলার নোয়াপাড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতার দুই তরুণী হলেন— মাধবপুরের সুলতানপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে রোজিনা আক্তার রোজা (২২) এবং একই এলাকার ভাড়াটিয়া নূর হোসেনের মেয়ে হামিদা খাতুন (১৬)।
পুলিশ জানায়, তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে ১ হাজার, ৫০০ ও ২০০ টাকার নোট ছিল। উদ্ধার করা জাল নোটগুলো বাজারে প্রচলিত আসল নোটের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যায়, যা সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে চিহ্নিত করা কঠিন ছিল।
হবিগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একে এম শামীম হাসান জানান, মঙ্গলবার রাতে নোয়াপাড়া বাজারের এক সবজি বিক্রেতার কাছ থেকে তিন কেজি আমড়া কেনেন রোজিনা ও হামিদা। ক্রয়কৃত পণ্যের দাম পরিশোধের সময় তারা এক হাজার টাকার একটি নোট দেন, যা পরে জাল বলে সন্দেহ হয়।
সবজি বিক্রেতার সন্দেহের পর আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের লেনদেনে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন এবং বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। পরে ডিবি পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই তরুণীকে আটক করে। অভিযানের সময় রোজিনার মা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় বাজারে জাল নোট চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওসি শামীম হাসান আরও জানান, “রোজিনা ও তার মা বহুদিন ধরে নোয়াপাড়া ও আশপাশের বাজারে জাল নোট দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। তারা বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটার আড়ালে জাল টাকা চালাতেন। এ চক্রের পেছনে আরও কয়েকজন সক্রিয় সদস্য রয়েছে, যাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত জাল নোটগুলো পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের আঞ্চলিক অফিসে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া রোজিনা ও হামিদার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৮৯(বি)/৪৮৯(সি) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জাল নোট শনাক্তের হার বেড়েছে। প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং স্থানীয় পর্যায়ে দুর্বল নজরদারির কারণে ছোট ছোট চক্র সক্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাল নোট প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজারে আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো জরুরি।
Leave a comment