ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে স্বামীকে হত্যা করে মরদেহ বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখার অভিযোগে রহিমা খাতুন (৩৮) নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর সন্দেহ ও নিখোঁজ অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার কিনারা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বামীর নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে অবশেষে নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন রহিমা।
গুয়াহাটির পান্ডু এলাকার জয়মতীনগরে গত ২৬ জুন রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। স্থানীয় পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, পারিবারিক কলহ ও শারীরিক সহিংসতার একপর্যায়ে স্বামী সাবিয়াল রহমানকে (৩৮) মারধর করে হত্যা করেন রহিমা। ঘটনার সময় সাবিয়াল মদ্যপ ছিলেন বলেও রহিমা পুলিশকে জানান।
হত্যার পর রাতের অন্ধকারে বাড়ির উঠানে প্রায় পাঁচ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে সাবিয়ালের মরদেহ পুঁতে ফেলেন রহিমা। এরপর প্রতিবেশীদের জানান, তাঁর স্বামী কেরালায় কাজে গেছেন। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই আশপাশের লোকজনের সন্দেহ বাড়তে থাকে। পরবর্তী সময়ে রহিমা অসুস্থতার কথা বলে চিকিৎসার অজুহাতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।
১২ জুলাই সাবিয়ালের ভাই স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপরদিন ১৩ জুলাই রহিমা নিজেই এসে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সবকিছু স্বীকার করেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ জয়মতীনগরে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে উঠানে পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করে। উপস্থিত ছিলেন ফরেনসিক দলের সদস্য ও একজন ম্যাজিস্ট্রেট।
পুলিশ বলছে, রহিমার স্বীকারোক্তির পাশাপাশি তদন্তে উঠে আসছে আরও কিছু প্রশ্ন। বিশেষ করে একজন নারীর পক্ষে একা এত বড় গর্ত খোঁড়া কঠিন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহ মাটিচাপা দিতে রহিমার সঙ্গে কেউ সহযোগিতা করেছিল। তদন্তকারীরা এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছেন।
১৫ বছর আগে রহিমা ও সাবিয়ালের বিয়ে হয়। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। সাবিয়াল ভাঙারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পারিবারিক কলহ এবং নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যে ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাটি নিয়ে গুয়াহাটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের তদন্ত চলমান রয়েছে এবং রহিমার দেওয়া তথ্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
Leave a comment