সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় চাঁদা আদায়ের সময় সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েছেন তিনজন কথিত সমন্বয়ক। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পুষ্পকাটি গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানীর বাড়িতে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নেওয়ার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তিনজন আটক হন। বাকিরা পালিয়ে যায়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন দেবহাটার বহেরা গ্রামের নাহিদ হাসান, শ্যামনগরের কৈখালি গ্রামের আব্দুর রহিম ও আশাশুনির বাসিন্দা আব্দুর রহমান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা নিজেদের পুলিশের পরিচয় দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্র প্রদর্শন করে। এসময় ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানীর ঘর থেকে তিনজন এবং তার ভাই আব্দুর রবের ঘর থেকে আরও দুইজন প্রবেশ করে। এই দুইজন ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। অন্যদিকে বাকি তিনজনকে আটক করে স্থানীয়রা সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা ক্যাম্পে খবর দিলে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাদের গ্রেফতার করে।
ঘটনার পর ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানী বলেন, “তারা পুলিশ পরিচয়ে বাড়িতে ঢুকে হুমকি দিয়ে জিনিসপত্র নেওয়ার চেষ্টা করে। দ্রুত আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইলে তারা তিনজনকে ধরে নিয়ে যায়।”
তবে বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মুজাহিদ বিন ফিরোজ। তিনি দাবি করেন, “গোলাম রব্বানী এলাকায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তাই সমন্বয়কারীরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়েছিল। ঘটনার পর আমাকে জানানো হলে আমি পুলিশ পাঠাই। কিন্তু ঘটনাটি উল্টোভাবে উপস্থাপন করে তাদের ডাকাত সাজানো হয়েছে।”
ইতোমধ্যে ইউপি সদস্যের স্ত্রী বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া হাসান বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। যেহেতু বিষয়টি সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ঘটেছে এবং তারা এখনো আটক ব্যক্তিদের আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি, তাই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।”
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছেন। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সেনাবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদন এবং পুলিশি পদক্ষেপের দিকেই এখন নজর সবার।
Leave a comment