টানা চার বছর ধরে সুখী দেশের তালিকায় পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এবছর ১৪৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৪তম অবস্থানে রয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় আরও পাঁচ ধাপ অবনমন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কেবল আফগানিস্তানই বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে, যা তালিকার একদম শেষ স্থানে রয়েছে।
২০২২ সালে বাংলাদেশ ছিল ৯৪তম, ২০২৩ সালে ১১৮তম, ২০২৪ সালে ১২৯তম এবং এবার ১৩৪তম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান ১১৮, পাকিস্তান ১০৯, নেপাল ৯২, শ্রীলঙ্কা ১৩৩ ও মিয়ানমার ১২৬তম স্থানে রয়েছে।
টানা অষ্টমবার শীর্ষে ফিনল্যান্ড
ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে এবারও সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ফিনল্যান্ড। এটি টানা অষ্টমবার তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এর পরই রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন ও নেদারল্যান্ডস। প্রথম দশের মধ্যে আরও রয়েছে নরওয়ে (৭), ইসরায়েল (৮) এবং লুক্সেমবার্গ (৯)।
বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে?
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্ক (SDSN) ও অক্সফোর্ড ওয়েলবিং রিসার্চ সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই প্রতিবেদনে ছয়টি সূচকের ভিত্তিতে দেশগুলোর সুখের মান নির্ধারণ করা হয়। সেগুলো হলো—
• মাথাপিছু জিডিপি
• সামাজিক সহায়তা
• সুস্থ জীবনযাপনের প্রত্যাশা
• ব্যক্তিগত স্বাধীনতা
• উদারতা
• দুর্নীতি নিয়ে জনমত
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের অবনমনের পেছনে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও দুর্নীতির উচ্চমাত্রা বড় কারণ হিসেবে কাজ করছে।
বিশ্ব সুখ দিবস ও প্রতিবেদন প্রকাশ
আজ ২০ মার্চ ‘বিশ্ব সুখ দিবস’। ২০১২ সালে জাতিসংঘ ২০ মার্চকে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তারপর থেকেই প্রতিবছর এই দিনটিতে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
গ্যালাপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলানা রন-লেভি বলেছেন, ফিনল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী। সেই সঙ্গে সেখানে সামগ্রিক বৈষম্য কম। তাই এসব দেশ নাগরিকদের জন্য বেশি সুখকর।
যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড অবনমন
এবারের তালিকায় সবচেয়ে বেশি অবনমন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটি এবছর ২৪তম স্থানে নেমে গেছে, যা এ পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে খারাপ অবস্থান।
অন্যদিকে, তালিকার শেষের দিক থেকে আফগানিস্তানের ওপরে রয়েছে সিয়েরা লিওন, লেবানন, মালাবি ও জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন ও দুর্নীতি রোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে তালিকায় উন্নতি করতে পারে। তবে এ জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন।
Leave a comment