পবিত্র রমজানের শেষ দশ দিন চলছে এবং মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর সামনে এসে পৌঁছেছে। পুরো বাংলাদেশে যেমন ঈদবাজারের আমেজ, তেমনই সিলেট শহরের নানা এলাকার বিপণন কেন্দ্রে জমে পড়েছে কেনাকাটার ধুম। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সিলেটের শপিংমল ও ফুটপাতে ভিড় জমছে ক্রেতাদের। ঈদের কেনাকাটার জন্য সিলেটের বিভিন্ন বাজারে চলছে অবিরাম ব্যস্ততা।
সিলেটের ঈদের বাজারে ভিড় চোখে পড়ার মতো। সিটি সেন্টার, ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, আল-হামরা শপিং সিটি, শুকরিয়া মার্কেট, সিলেট প্লাজা, আহমদ ম্যানশনসহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, নয়াসড়ক এলাকা এবং মহাজনপট্টির পাইকারি বাজারে ক্রেতাদের পদচারণায় পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে চাহিদার কেন্দ্রে। তবে, দাম বৃদ্ধি এবং বিক্রির চাপ ক্রেতাদের জন্য কিছুটা অসুবিধার সৃষ্টি করেছে।
গত বছর যে পোশাকটি ১,৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, সে পোশাকটির দাম এবার ২,৩০০ টাকা হয়ে গেছে, যা অনেকের জন্য অস্বস্তির কারণ। বিক্রেতারা উল্লেখ করছেন, ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।শুকরিয়া মার্কেটে ঈদের বাজার করতে আসা আফসানা জান্নাত মিম বললেন, গত বছর যে জামা ১ হাজার ৮০০ টাকায় কিনেছিলাম, এবার সেটার দাম ২ হাজার ৩০০ টাকা। কিন্তু ভাইবোনের জন্য ঈদে তো কিছু না কিনে পারি না।
ক্রেতারা জানান, এবারও মেয়েদের কাছে থ্রিপিস ও লেহেঙ্গা এবং নারীদের কাছে শাড়ির চাহিদাই শীর্ষে আছে। পুরুষ কিংবা তরুণদের মধ্যে পাঞ্জাবি-পায়জামা, ফতুয়া ও শার্ট, টি-শার্ট, জিনস প্যান্টের চাহিদা রয়েছে। তরুণীরা দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকের পাশাপাশি পাকিস্তানি ও ভারতীয় লেহেঙ্গা ও থ্রিপিস ক্রয় করছেন। তার বাইরে জুতা ও কসমেটিকস কিনতেও ভিড় জমাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে সিলেটের আড়ং, মাহা, চন্দ্রবিন্দু, কুমারপাড়া এবং লামাবাজারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দেশীয় ব্র্যান্ডের কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে কাতান, বেনারসি ও মাস্তানি পোশাকগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, ভারতীয় পোশাকের কম সরবরাহ এবং পাকিস্তানি পণ্যের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঈদের বাজার যত ঘনিয়ে আসছে, ততই যানজটের সমস্যাও বাড়ছে। সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেমন চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া—এসব স্থানে রাস্তায় মানুষের ভিড় এমনকি হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে উৎসবের আমেজ, অন্যদিকে যানজটের কারণে অনেকেই তাদের কেনাকাটা সম্পূর্ণ করতে পারছেন না।
ব্লু-ওয়াটার শপিং সেন্টারের রিমা বেগম বলেন, “ঈদের কেনাকাটা প্রায় শেষ, শুধু কসমেটিকস আর জুতা বাকি ছিল। কিন্তু যানজট ও মানুষের ভিড়ের কারণে আর শপিং করার ইচ্ছা ছিল না।”
বাজারে ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ তৎপর রয়েছে। অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, “প্রতিটি মার্কেট এবং শপিংমলে সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই, তবে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে
Leave a comment