মিরপুরের একটি মাদ্রাসায় ১৪ বছরের ছাত্র সিয়ামের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের পর তার মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। একদিকে পুলিশ বলছে, এটি সম্ভবত আত্মহত্যা। অন্যদিকে, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া মরদেহের ছবি ঘিরে অনেকেই বলছেন, ঘটনাটি হত্যা।
ঘটনাটি ঘটে ২১ জুলাই, সোমবার। মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল-ইসলামী মাদ্রাসার দোতলার শৌচাগার থেকে সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিয়ামের পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি, লুঙ্গি ও টুপি। জানালার গ্রিলে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান সহপাঠীরা। এক পা কমোডে, আরেক পা মেঝেতে ছিল; পাশে পড়ে ছিল দুটি বদনা।
পুলিশ জানায়, মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সিয়াম দুপুর ১১টার দিকে শৌচাগারে যায়, পরে গামছা নিয়ে আবার ঢোকে। এরপর দীর্ঘসময় না বের হওয়ায় অন্যরা দরজা ধাক্কা দিলে ছিটকিনি খুলে মরদেহ দেখতে পান।
দারুসসালাম থানার ওসি রকিব-উল-হোসেন জানান, পরিবারের আপত্তি না থাকায় এটি একটি অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তবে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে আসে বুধবার রাত থেকে, যখন সিয়ামের মরদেহের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, আত্মহত্যা করলে শরীরের ভঙ্গি ও পায়ের অবস্থান এমন হওয়ার কথা নয়।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আজিজুল হক বলেন, “ময়নাতদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক আলামতে আত্মহত্যাই মনে হচ্ছে।”
সিয়ামের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। তিনি মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকতেন। তার বাবা সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার আগের দিনই ঢাকায় এসে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়েছিলেন ঠোঁট ও পায়ের ফোসকার জন্য। সিয়াম ছিল দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে বড়।
এই ঘটনায় এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তদন্ত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আত্মহত্যা নাকি হত্যা—সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তবে এক কিশোরের এমন মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে যেভাবে ছবি ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে গোপনীয়তা ও মর্যাদার প্রশ্নেও।
Leave a comment