চলচ্চিত্রজগতে শরীফুল রাজ এখন পরিচিত ও আলোচিত নাম। অভিনয়ে এক যুগের বেশি সময় কাটিয়ে ফেললেও বড় পর্দায় তার দশ বছরের যাত্রা বিশেষভাবে স্মরণীয়। ২০১৬ সালে ‘আইসক্রিম’ দিয়ে শুরু, আর ২০২৫ সালে এসে ‘ইনসাফ’ দিয়ে নতুনভাবে আলোচনায়। এই ছবিতে রাজের পারফরম্যান্স নতুন মোড় এনে দিয়েছে তার ক্যারিয়ারে, এবং নিজেও স্বীকার করছেন—এ ধরনের বাণিজ্যিক ছবির অভিজ্ঞতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
‘ইনসাফ’ মুক্তির পরই চলচ্চিত্রপ্রেমী ও নির্মাতাদের চোখ ফেরে রাজের দিকে। নতুন সিনেমার গল্প শুনেছেন ছয়টি, কিন্তু কোনটা দিয়ে যাত্রা শুরু করবেন, সে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত নয়। এক কথায়, পরবর্তী ছবির জন্য তিনি রোমাঞ্চিত। রাজের ভাষায়, “সবাই চায় আমি আবার অ্যাকশন করেই ফিরি। আর আমি প্রস্তুত, কারণ একটানা ছুটির পর নিজেকে এখন পুরোপুরি তৈরি মনে হচ্ছে।”
সম্প্রতি একটি ছোট ছুটিতে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন রাজ, বোনের কাছে। এই সফরটা শুধু অবকাশ কাটানো নয়, ছিল আবেগ ও আত্মিক আনন্দে ভরা। প্রথমবার মামা হতে যাচ্ছেন—এই খবরে আপ্লুত রাজ বোনের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন কুয়ালালামপুরে। ঘুরেছেন, রিফ্রেশ হয়েছেন, প্রেমে পড়ে গেছেন শহরের। রাজ বললেন, “ঘোরাঘুরি হলো একধরনের মেডিসিন, যেটা আমাকে নতুনভাবে বাঁচতে শেখায়, কাজ করতে উৎসাহ দেয়।”
রাজ এখন নিয়মিত জিম করছেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরবর্তী কাজের জন্য। সপ্তাহে পাঁচ দিন দুই ঘণ্টা সময় দিচ্ছেন ফিটনেসে। মনে করেন, ফিটনেস শুধুই বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, মানসিক প্রশান্তিরও অন্যতম উৎস। বিশেষত অ্যাকশন সিনেমার জন্য জিম একান্ত জরুরি। শিগগিরই ব্যাংককে গিয়ে ফাইট প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজের আগ্রহ বই আর সিনেমায়। ক্ল্যাসিক সিনেমা তার পছন্দের তালিকায় উপরের দিকেই। আল পাচিনো, রবার্ট ডি নিরো, জনি ডেপ, ডেনজেল ওয়াশিংটন, ব্র্যাড পিট—সবাই তার প্রিয়। প্রিয় নায়িকাদের প্রসঙ্গে হাসিমুখে বলেন, “সব নায়িকাকেই আমার খুব ভালো লাগে। ডেমি মুরের এমন কোনো ছবি নেই, যেটা আমি দেখিনি। দীপিকা পাডুকোন, আলিয়া ভাটও দারুণ লাগে।”
ঢালিউডের সহশিল্পীদের নিয়েও রাজের প্রশংসা অকপট। মিম, বুবলী, তুষি, ফারিণ, সাবিলা নূর, মন্দিরা—সবাইকে দারুণ অভিনেত্রী মনে করেন। তাঁর মতে, তারা নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। ফারিণ সম্পর্কে বলেন, “সে অসাধারণ। বাণিজ্যিক সিনেমায় আরও বেশি কাজ করা উচিত ওর।”
রাজ নিজেকে এখনো সংগ্রামী মনে করেন। শাকিব খান, আরিফিন শুভ, সিয়াম আহমেদ—এই তারকারা তাঁকে সবসময় অনুপ্রাণিত করে। পরিচালকদের মধ্য থেকে রায়হান রাফি, সুমন, রনি, গিয়াসউদ্দিন সেলিম—সবার কাছ থেকেই পেয়েছেন প্রেরণা। “এই অনুপ্রেরণাই আমাকে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু করতে সাহস দেয়,” বলেন রাজ।
এখন তাঁর একটাই লক্ষ্য—নিজেকে একজন সফল অভিনয়শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছেন। আর কাজের প্রতি তাঁর এই নিষ্ঠা, প্রস্তুতি আর ভালোবাসাই হয়তো ভবিষ্যতের ঢালিউডকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
 
                                                                         
                                                                        
 
			             
			             
 
			         
 
			         
 
			         
 
			         
				             
				             
				            
Leave a comment