সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে জয়রথ অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নেপালের বিপক্ষে ৩–২ গোলের নাটকীয় জয় পেয়েছে লাল–সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে তৃষ্ণা রানীর গোলে নিশ্চিত হয়েছে এই কষ্টার্জিত জয়।
শনিবার ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমার্ধেই ২–০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গোল করেন সিনহা জাহান শিখা ও মোসাম্মৎ সাগরিকা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণভাগে এলোমেলো আচরণ ও সাগরিকার লাল কার্ডে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে স্বাগতিক দল। এর সুযোগ নিয়ে দুটি গোল করে সমতা ফেরায় নেপাল। যখন ম্যাচ ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছিল, ঠিক তখনই উমেলা মারমার পাস থেকে তৃষ্ণার শেষ মুহূর্তের গোল এনে দেয় পূর্ণ তিন পয়েন্ট।
ম্যাচের শুরু থেকেই প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ১৩ মিনিটে শিখার গোলে এগিয়ে যায় দল। সাগরিকার বাড়ানো বল জটলার মধ্যে পেয়ে প্রথমে মুনকি শট নিলেও তা প্রতিহত হয়, ফিরতি বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শিখা নিশ্চিত করেন গোল। ৩৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাগরিকা। শান্তি মার্ডির ক্রসে শিখার শট দুইবার প্রতিহত হলেও শেষ পর্যন্ত বল পেয়ে সাগরিকা নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন।
বিরতির পর ৫৫ মিনিটে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন বাংলাদেশের সাগরিকা ও নেপালের সিমরান রায়। দুই দলই তখন ১০ জন নিয়ে খেলতে বাধ্য হয়। সংখ্যাগত ঘাটতিতে পড়ে খানিকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৭৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আনিশা রায়ের গোল এবং ৮৭ মিনিটে মিনা দেউবার গোলে সমতায় ফেরে নেপাল।
মাঠে তখন নীরবতা, গ্যালারিতে হতাশা। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার আগেই শেষ কথা বলে দিলেন তৃষ্ণা রানী। ডান পাশ দিয়ে উমেলার বাড়ানো ক্রসে ফাঁকায় থাকা তৃষ্ণা ঠাণ্ডা মাথায় বল পাঠিয়ে দেন নেপালের জালে। মাঠে তখন উল্লাসের ঢেউ, গ্যালারিতে বিজয়ের গর্জন।
এর আগে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ ৯–১ গোলের বড় জয় পেয়েছিল। আজকের জয় শেষে দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে চারটি দল একে অন্যের বিপক্ষে দুবার করে খেলবে। পয়েন্টে এগিয়ে থাকা দল হবে চ্যাম্পিয়ন।
বয়সভিত্তিক সাফ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মেয়েদের দাপট নতুন নয়। এখন পর্যন্ত পাঁচ আসরের চারটিতে শিরোপা জিতেছে তারা। এবারের টুর্নামেন্টেও সেই আধিপত্য ধরে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তৃষ্ণারা।
Leave a comment