সোমবার রাতে তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চল শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠেছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১। দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা এএফএডি (AFAD) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল বালিকেসি প্রদেশের সিনদিরগি শহরের কাছে। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফরাসি সংবাদ সংস্থার (এএফপি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। সিনদিরগি ছাড়াও রাজধানী আঙ্কারা থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরের শহর ইস্তাম্বুল এবং জনপ্রিয় পর্যটননগর ইজমিরেও কম্পন টের পাওয়া যায়। ভূমিকম্পের কারণে বহু মানুষ আতঙ্কে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া জানান, ভূমিকম্পের পরপরই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তিনি বলেন, “সিনদিরগির তিনটি ভবন ও একটি দোকান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর সেগুলো ধসে পড়ে, তবে কেউ আহত হননি।” তিনি আরও জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও জরুরি সেবা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
এএফএডির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মাটি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ ধরনের অগভীর ভূমিকম্প সাধারণত বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করে, তবে এবারের ক্ষেত্রে বড় কোনো ক্ষতির খবর এখনো মেলেনি। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় সাময়িক বিঘ্ন দেখা দিলেও দ্রুত তা স্বাভাবিক হয়ে আসে।
ইস্তাম্বুলের কিছু অংশে রাতের এই ভূকম্পন নিয়ে স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। অনেকে জানান, কয়েক সেকেন্ডের জন্য ভবন দুলতে থাকে এবং আসবাবপত্র কাঁপতে শুরু করে। আতঙ্কে অনেক বাসিন্দা ভবনের বাইরে অপেক্ষা করেন।
ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ইএমএসসি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হলেও এর কেন্দ্র ছিল জনবসতিপূর্ণ এলাকার বাইরে। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা কম থাকার সম্ভাবনা বেশি। তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী আফটারশক পর্যবেক্ষণ ও নাগরিকদের সতর্ক রাখার পরামর্শ দিয়েছে। তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটির উত্তর আনাতোলিয়া ফল্ট লাইন (North Anatolian Fault) ভূমিকম্পের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
Leave a comment