জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে দেশের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই)। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এফডিআই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭১ শতাংশ কমেছে, যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
প্রথম প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ৯৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যেখানে একই সময়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার দেশে থেকে তুলে নিয়ে গেছেন। এর ফলে নিট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
অর্থবছরের শুরু থেকেই রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। আন্দোলন ও অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক কাঠামো ঝুঁকির মুখে পড়ে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহে।
এমন সময়ে বিদেশি বিনিয়োগে পতনের তথ্য উঠে এলো, যখন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) বিনিয়োগ আকর্ষণে হিটম্যাপ ঘোষণা করেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ আগে থেকেই বিনিয়োগকারীদের জন্য খুব বেশি অনুকূল ছিল না। অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি।
ফরেন ইনভেস্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাভেদ আখতার মন্তব্য করেন, “আমাদের অসংখ্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রয়োজন নেই। বরং তিনটি ভালো মানের অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করে সঠিক ফ্যাসিলিটি নিশ্চিত করতে পারলে, বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবে।”
প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাজ্য থেকে সর্বোচ্চ ৬২.২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৬১.৩৯ মিলিয়ন ডলার এবং চীন থেকে ৫৫.৮৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে তৈরি পোশাক খাতে, যা দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ ছাড়া এফডিআই বাড়ানো সম্ভব নয়। দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a comment