ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের খবর ছড়িয়ে পড়তেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন গাজাবাসী। কেউ আনন্দে কেঁদেছেন, কেউ গান গেয়েছেন, আবার কেউ চিৎকার করে বলছেন, “আল্লাহু আকবর”—দীর্ঘ যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে বহুদিন পর এমন আনন্দের দৃশ্য দেখা গেল।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে গাজায় যুদ্ধবিরতি বিষয়ক নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ইসরায়েল ও মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতার তাৎক্ষণিকভাবে এতে সম্মতি জানালেও, হামাস প্রথমে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। পরে ৩ অক্টোবর হামাসের সম্মতির পর ট্রাম্প ইসরায়েলকে বোমাবর্ষণ বন্ধের নির্দেশ দেন।
এরপর ৬ অক্টোবর মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু হয়। টানা দুই দিনের আলোচনার পর মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে স্বাক্ষর করে ইসরায়েল ও হামাস।
এই পর্যায়টি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হবে। এই সময়ে হামাস তাদের সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে, আর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করবে, কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে এবং ধীরে ধীরে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে। চুক্তি স্বাক্ষরের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার রাতেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে উল্লাস মিছিল বের হয়। তরুণরা বাঁশি, খঞ্জনি ও ড্রাম বাজিয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।
গাজার পাঁচ সন্তানের মা ঘাদা রয়টার্সকে বলেন, “হ্যাঁ, আমি কাঁদছি, কিন্তু এটা আনন্দের অশ্রু। মনে হচ্ছে, আমরা নতুন করে জন্ম নিয়েছি। আশা করছি, এই ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান হবে।”
তরুণী ইমান আল কৌকা বলেন, “আজ আমাদের আনন্দের দিন, আবার দুঃখেরও দিন। আমরা যাদের হারিয়েছি, যেসব স্মৃতি হারিয়েছি—সব মনে পড়ছে। এই যুদ্ধ আমাদের শহরকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যেন প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফেলে দিয়েছে।”
সূত্র: রয়টার্স
Leave a comment