Home জাতীয় অপরাধ যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক নিহত
অপরাধআন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক নিহত

Share
Share

যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা চলতে থাকা অবস্থায়ও থেমে নেই ইসরায়েলের আগ্রাসন। আজ রোববার ভোর থেকেই ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অন্তত ১২৫ জন নিহত হয়েছেন। আল–জাজিরা ও রয়টার্স জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে। ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়েছে গাজার দক্ষিণ, উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলে, যেখানে বহু বাসিন্দা আগেই নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছিলেন।

গতকাল শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে এই আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার আগেই শুরু হয় নতুন রক্তপাত। রয়টার্স জানায়, খান ইউনিসের এক আশ্রয়শিবিরে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৪ জন। পুড়ে গেছে শিবিরের অনেক তাঁবু। আহত হয়েছেন অনেক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।

গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল আগেই জানিয়েছিল, যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে তারা গাজাজুড়ে ব্যাপক হামলা চালাবে। সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন যেন এক নির্মম বাস্তবতাই হয়ে দেখা দিচ্ছে, যেখানে একদিকে চলছে যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ, আর অন্যদিকে আকাশপথে বর্ষিত হচ্ছে বোমা।

হামাস এই হামলাকে ‘নতুন এক নৃশংসতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে এ অবস্থার জন্য দায়ী করেছে। তাদের দাবি, ওয়াশিংটনের অব্যাহত সমর্থনই ইসরায়েলকে আরও নির্মম করে তুলেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই সর্বশেষ হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও, আগে জানিয়েছিল— গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানো হচ্ছে যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে।

দোহায় চলমান আলোচনায় অগ্রগতি হয়নি বলেও জানিয়েছে আলোচনা-সংশ্লিষ্ট সূত্র। উভয় পক্ষ তাদের পূর্বের অবস্থানে অনড় থাকায় সংকট উত্তরণের পথ সুদূরপরাহত হয়ে উঠছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হওয়ার পর গাজায় সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় দুই মাস স্থায়ী হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের আক্রমণ শুরু করে তারা। এর পর থেকে শত শত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আজকের হামলা সেই ধারাবাহিক রক্তপাতকেই আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। আশ্রয়, চিকিৎসা, খাদ্য ও পানির সংকটে মানুষ দিশেহারা। অথচ আলোচনার ছায়াতেই চলছে বোমার শব্দ। যুদ্ধবিরতির টেবিলে শান্তি খোঁজা আর আকাশে আগুন বর্ষণের এই দ্বৈত আচরণে আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ।

 

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

পুরোনো বিমানবন্দরে ‘এয়ার শো’ দেখতে মানুষের ঢল

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে আয়োজিত বিশেষ ‘এয়ার শো’ দেখতে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে...

বিজয় দিবসকে ঘিরে দেশজুড়ে র‌্যাবের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রস্তুতি

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জনসমাগমস্থল এবং বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত...

Related Articles

সিলেটে তরুণদের বিদেশমুখিতা বাড়ছে, কারণ ….

সিলেটকে বলা হয় ‘দ্বিতীয় লন্ডন’। যুক্তরাজ্যে সিলেটি প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির কারণে এই...

রাশিয়ার রোস্তভে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা: নিহত ৩

রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ অঞ্চলে রাতভর চালানো ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় অন্তত তিনজন নিহত...

ওবায়দুল কাদের ও সাদ্দামসহ ৭ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

জুলাই–আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী...

হাদি হত্যাচেষ্টা মামলায় শুটার ফয়সালের বাবা–মায়ের চাঞ্চল্যকর জবানবন্দি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নতুন...