রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কেউ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে, কেউ চুরি বা দস্যুতা মামলায়, আবার কেউ পরোয়ানাভুক্ত আসামি হিসেবে ধরা পড়েছেন। শুক্রবার (২০ জুন) দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। শনিবার (২১ জুন) ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ২ জন ডাকাতির প্রস্তুতিকালে, ৬ জন আদালতের পরোয়ানাভুক্ত আসামি, ৩ জন দস্যুতার মামলার অভিযুক্ত, ১ জন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়েরকৃত মামলার আসামি এবং অপর একজন চুরির ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে তাঁদের কাছ থেকে একটি সামুরাই তরবারি, একটি লোহার ছোরা এবং একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন: শামীম (৩২), শাহাদাত (২৩), নিদার হাসান (১৭), ফাহাদ (১৬), আলাভী আনাম (১৬), সাজ্জাদুর রহমান রবিন (৩০), রেজাউল (৪০), রাসেল (২২), কাদের (৩২), সাব্বির (২৩), জামাল (২৭), রবিন (২৩) এবং আলমগীর (৩৮)।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নানা ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ এই অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেপ্তার অভিযুক্তদের শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং পৃথক মামলায় রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই একাধিক মামলা রয়েছে, এবং তাদের অনেকেই এর আগেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। একাধিক গ্রুপ বা চক্র গড়ে তুলে তারা বিভিন্ন সময় এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও দস্যুতার মতো অপরাধে সক্রিয় ছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা এ কে এম মেহেদী হাসান জানান, “অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের ফলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এই ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে এবং অপরাধীদের কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।”
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সম্প্রতি মোহাম্মদপুর এলাকায় সন্ধ্যার পর থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছিল, দোকানপাটে হানা দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছিল। ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ছিল। পুলিশি অভিযানের পর কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানান তাঁরা।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্য সহযোগী ও চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তদন্তে কোনো নতুন তথ্য পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সকলের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়েছে, এলাকায় অপরাধসংক্রান্ত যেকোনো তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় থানায় জানাতে।
Leave a comment