মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর এলাকায় ভৈরব নদে গোসল করতে নেমে ডুবে যাওয়া দুই বন্ধুর মরদেহ ছয় ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। সোমবার রাতে এই উদ্ধার অভিযান শেষ হয়।
নিহতরা হলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের মাহির হোসেনের ছেলে কৌশিক (১৫) এবং টেংরামারি গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে তানভীর (২০)। কৌশিক স্থানীয় একটি স্কুলের ছাত্র, আর তানভীর পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, সোমবার দুপুর ২টার দিকে তানভীর ও কৌশিকসহ কয়েকজন বন্ধু রশিকপুর সুইচগেট এলাকায় ভৈরব নদে গোসল করতে যান। এ সময় নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় তারা দুজন গভীর পানিতে তলিয়ে যান। অন্য বন্ধুরা চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার প্রচেষ্টা চালান, তবে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি চালালেও ব্যর্থ হয়। পরে খুলনা থেকে বিশেষ ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত ৭টার দিকে ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি শুরু করে। রাত সাড়ে ৭টার দিকে প্রথমে তানভীরের মরদেহ এবং রাত ৮টার দিকে কৌশিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মুজিবনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার সেলিম রেজা বলেন, “নদীতে পানির প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রমে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে আমাদের ডুবুরি দল নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ চালিয়ে গেছে এবং শেষ পর্যন্ত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।”
দুই বন্ধুর মৃত্যুর খবরে তাদের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া। অনেকেই ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন,“উদ্ধার হওয়া দুইজনের মরদেহ প্রাথমিক সুরতহাল শেষে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন।”
বাংলাদেশে প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। বাংলাদেশ হেলথ অ্যান্ড ইনজুরি সার্ভে অনুযায়ী, দেশে বছরে গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করে, যার মধ্যে বড় অংশই শিশু ও কিশোর। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সাঁতার শেখা ও সচেতনতাই এই দুর্ঘটনা রোধের কার্যকর উপায়।
Leave a comment