মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক সদ্ভাব ও সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামের শিক্ষা। তবে প্রশ্ন আসে—অমুসলিমরা কি মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন? আবার মুসলমানরা কি গির্জা বা মন্দিরে যেতে পারেন? ইসলামের দৃষ্টিতে এর সীমারেখা কোথায়?
কানাডার বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ড. শাবির আলি এ বিষয়ে বলেন,“অবশ্যই অমুসলিমরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন। বরং মসজিদগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত, যাতে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, অনেক সময় অমুসলিমরা কৌতূহলবশত জুমার নামাজে উপস্থিত থাকতে চান। এতে সমস্যা নেই। তবে মসজিদের নিজস্ব নীতিমালা থাকতে পারে—তাই আগেভাগে অনুমতি নেওয়া উত্তম।
ইসলামী ফিকাহবিদদের মতে, অমুসলিমরা শালীন পোশাক পরিধান করে, মসজিদের আদব ও পবিত্রতা বজায় রেখে মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন। নবী করিম (সা.)-এর যুগেও অমুসলিম প্রতিনিধিরা মসজিদে নববীতে অবস্থান করেছিলেন—এ মর্মে একাধিক হাদিস পাওয়া যায়।
তবে বিশেষ সতর্কতা হলো—
• মসজিদে প্রবেশের সময় যেন পবিত্রতা ও সম্মান বজায় থাকে।
• কোনো অবস্থাতেই মসজিদকে পর্যটন বা বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
• মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হয়—এমন আচরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
প্রাচীন ইসলামী আলেমরা সাধারণত মুসলমানদের অন্য ধর্মের উপাসনালয়ে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করতেন—কারণ, সেখানে ভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান চলতে পারে, যা বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে।তবে ড. শাবির আলি বলেন,“বর্তমান সমাজে মুসলিম ও অমুসলিমদের সামাজিক ও পেশাগত সম্পর্ক রয়েছে। বন্ধুর বিয়ে বা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে গিয়ে মন্দির বা গির্জায় যেতে হতে পারে—এতে দোষ নেই, যতক্ষণ না সে অন্য কোনো দেবতার উপাসনায় অংশ নিচ্ছে।” অর্থাৎ, মুসলমান যদি নিজের বিশ্বাসে দৃঢ় থাকে এবং শুধুমাত্র সৌজন্য বা মানবিক সম্পর্কের কারণে এসব স্থানে যায়, তাহলে তা ইসলামসম্মত।
Leave a comment