মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ২০ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিনজন। ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩০ তলা একটি ভবন ধসে ৪৩ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের মান্দালয়ের কাছে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। মাত্র ১১ মিনিট পর ৬.৪ মাত্রার একটি পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের কম গভীরতা (মাত্র ছয় মাইল) হওয়ায় কম্পন ভয়াবহভাবে টের পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডেও কম্পন অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পে মান্দালয়ে বহু ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে আহতদের ঢল নেমেছে। আতঙ্কে অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে খোলা জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
৪৫ বছর বয়সী দাউ কি শোইন তাঁর তিন বছর বয়সী মেয়েকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভূমিকম্প শুরু হতেই দৌড়ে নিচে নেমেছিলাম, পরে মেয়েকে আনতে গেলে আমার ওপর ইট পড়ে।” আহত অবস্থায় হাসপাতালের সামনে তিনি বলেন, “আমি মরতে চাই না, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন।”
মান্দালয় জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার কিয়াও জিন জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন মারা গেছেন এবং আহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে।
ব্যাংককে ভূমিকম্পের ফলে নির্মাণাধীন ৩০ তলা একটি ভবন ধসে পড়ে। এতে তিনজন নিহত এবং ৪৩ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। ভূমিকম্পের আতঙ্কে শহরের রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ঐতিহাসিক সাগাইং সেতু ধসে পড়েছে। এটি মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলের সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছিল। রাজধানী নেপিডোতেও বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
উভয় দেশেই উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব জানতে আরও সময় লাগবে।
Leave a comment