মিথ্যা তথ্য প্রদান করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) চাকরি পাওয়া এবং সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে অনিয়মের মাধ্যমে ২০টি ব্যাংক থেকে ৩৩ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদকের দায়ের করা এক মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও নজরুল ইসলাম মজুমদার পরস্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসভুক্ত ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) তহবিল থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালের মে মাসে ২০টি ব্যাংক বাধ্য হয়ে তাদের সিএসআর তহবিল থেকে ৩৩ কোটি ৫ লাখ টাকা সূচনা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে প্রদান করে। এই অর্থ কীভাবে এবং কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে, তা জানার জন্য দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। এ বিষয়ে সূচনা ফাউন্ডেশনে চিঠি পাঠানো হলেও কোনো আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নথি পাওয়া যায়নি। এমনকি দুদকের একটি অভিযানে ফাউন্ডেশনটির কোনো কার্যক্রমের অস্তিত্বও মেলেনি।
দুদকের অনুসন্ধানে দাবি করা হয়েছে, ভুয়া রেকর্ডপত্র ব্যবহার করে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
দুদকের আরেকটি মামলায় বলা হয়েছে, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালে তিনি এই পদে নিয়োগের জন্য সিভি জমা দেন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিক্ষকতা/শিক্ষা ম্যানুয়েল তৈরি সংক্রান্ত কাজ করার কথা উল্লেখ করেন। এ ছাড়া, তিনি সিভিতে মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম সম্পর্কিত কারিগরি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেন।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে, তার সিভিতে উল্লেখিত তথ্যগুলোর অনেকটাই বাস্তবের সঙ্গে মেলে না। মিথ্যা তথ্য প্রদান করে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দুটি মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a comment