ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইফতেখার মাহমুদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ।
মাত্র এক বছর আগে ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে আইন অঙ্গন, শিক্ষক সমাজ ও সাহিত্যজগতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
আইনশাস্ত্র, সাহিত্য ও ন্যায়বোধ নিয়ে কাজের মধ্য দিয়ে ইফতেখার মাহমুদ তরুণ সমাজের কাছে হয়ে উঠেছিলেন অনুপ্রেরণার প্রতীক। বিসিএস ক্যাডার হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনিক চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা ও লেখালেখিকে তিনি জীবনের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।
তার বন্ধু ও সহকর্মী অ্যাডভোকেট আবু তালেব ফেসবুকে লেখেন—“প্রিয় বন্ধু ইফতেখার মাহমুদের চিরবিদায়। ব্রেইন ক্যান্সারের সঙ্গে এক বছরের যুদ্ধ শেষে সে হেরে গেলো। জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে সে আইন অঙ্গন ও সাহিত্যজগতে এক উজ্জ্বল জীবন গড়েছিলো। ওর বই ও লেখাগুলো অমর হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও লেখেন,“পরিবারের সদস্যদের বিশেষ করে একমাত্র মেয়ে মনীষাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী মৌরি মাহদী লিখেছেন—“আইনের বই পড়া শুরু হয়েছিল স্যারের হাত ধরে। তিনি শুধু পড়াতেন না, শেখাতেন— কীভাবে ভাবতে হয়, কথা বলতে হয়, জীবনকে শৃঙ্খলিতভাবে গড়তে হয়। আজ আমি যা কিছু বলি বা লিখি, তার ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন তিনি।”
আরেক শিক্ষার্থী পুস্পিতা দে লিখেছেন—“ইফতেখার মাহমুদ স্যার শুধু আইন শেখাননি, শেখিয়েছেন জীবনের ন্যায়বোধ। তার হাসি, ক্লাসের আলাপ—সব আমাদের মনে থাকবে চিরকাল। প্রিয় স্যার, ওপারে ভালো থাকবেন।”
ইফতেখার মাহমুদ ছিলেন আইনের শিক্ষক, লেখক ও চিন্তাবিদ। তার লেখায় উঠে আসত আইন, সমাজ ও মানবিকতার সংযোগ। পত্রপত্রিকায় তার নিয়মিত কলাম তরুণ আইন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তার মৃত্যুতে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা বলেন, “তিনি ছিলেন এক অনন্য শিক্ষক—শিক্ষার্থীদের প্রতি নিবেদিত, চিন্তায় মুক্ত, আর ভাষায় গভীর।”
আইন ও সাহিত্যকে ভালোবেসে যিনি এক জীবনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, সেই ইফতেখার মাহমুদ আজ না ফেরার দেশে। সবাই প্রার্থনা করছেন—“আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন এবং তাঁর পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দেন।”
Leave a comment