উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর ঐতিহাসিক নগরী ফেজে জোড়া ভবন ধসে অন্তত ২২ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। বুধবার ভোরের দিকে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেজের আল-মুস্তাকবাল এলাকায় পাশাপাশি থাকা চারতলা দুটি আবাসিক ভবন রাতের কোনও একসময় হঠাৎ ধসে পড়ে। ভবন দুটিতে মোট আটটি পরিবার বসবাস করছিল। ধসের খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন , নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক সুরক্ষা বিভাগ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এসএনআরটি জানিয়েছে, ধসে পড়া ভবন দুটিতে বহুদিন ধরে ফাটল ও কাঠামোগত ক্ষতির চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কথা জানা সত্ত্বেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, ভবন ধসের ক্ষয়ক্ষতি বা অবহেলাসংক্রান্ত অভিযোগ তারা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। মরক্কোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়নি।
অষ্টম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত ফেজ মরক্কোর অন্যতম প্রাচীন এবং তৃতীয় বৃহত্তম নগরী। মাত্র দুই মাস আগে এই শহরে জীবনযাত্রার অবনতি, উচ্চ ব্যয় ও অপ্রতুল জনসেবার কারণে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। স্থানীয়রা তখনও নগরের অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এই ভবন ধসের ঘটনায় সেই ক্ষোভ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। কর্মকর্তারা জানান, ধ্বংসস্তূপ সরাতে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মরক্কোর অধিকাংশ জনসংখ্যা ও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কেন্দ্রীভূত। ফলে কিছু নগর এলাকায় জনসংখ্যার চাপ এবং অপরিকল্পিত অবকাঠামো গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে পুরনো ভবনসমূহ যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এ ধরনের দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। ফেজের সাম্প্রতিক ভবন ধস দেশটির নগর নিরাপত্তা ও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় নতুন করে নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দিল।
Leave a comment