কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই সরকার সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর শুল্ক ও কর বৃদ্ধি করেছে। মূলত আর্থিক টানাপোড়েন কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতির ওপর এর সরাসরি প্রভাব না পড়লেও সাধারণ ভোক্তাদের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ফলে ক্রেতাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। যদিও গত বছরের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারির মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানে খানিকটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে, তবুও জীবনযাত্রার ব্যয় কমার কোনো লক্ষণ নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে সব পণ্য ও সেবার মূল্যস্ফীতির হিসাব করা হয়, তার মধ্যে ভ্যাট বৃদ্ধিপ্রাপ্ত পণ্যের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তাই মূল্যস্ফীতির সূচকে এটি বড় প্রভাব ফেলেনি।
অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষের ব্যয়ের বড় অংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য বরাদ্দ থাকে। চালের মতো প্রধান খাদ্যপণ্যেই মোট ব্যয়ের ২০-২২ শতাংশ খরচ হয়। ফলে একটি নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর ব্যয় সামান্য বৃদ্ধি পেলেও সেটি ভোক্তাদের সামগ্রিক ব্যয়ে বড় ধাক্কা দেয়। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
এদিকে, ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায় খরচ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে বেচাবিক্রি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান মনে করেন, এতে নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে এবং খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায় মন্দা দেখা দেবে।
অন্যদিকে, ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে। জনগণের চাপের মুখে তিন থেকে চারটি পণ্য ও সেবায় সরকার আগের হারে কর বহাল রেখেছে। তবে সামগ্রিকভাবে ব্যয়ের চাপ ক্রমেই বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলছে।
Leave a comment